পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
পাখীর কথা

তম পক্ষিবিজ্ঞান তারস্বরে ইহার প্রতিবাদ করিয়া বলিতেছে যে, এরূপ মন্তব্য প্রকাশ করিয়া তাঁহারা সংঙ্কীর্ণতার ও একদেশদর্শিতার পরিচয় দিতেছেন। এ’ত গেল একটা কথা। আবার কখনও বলা হয় যে, মানুষ জবরদস্তি করিয়া খাঁচার মধ্যে বিভিন্নজাতীয় পোষা পাখীর যৌনসম্মিলন ঘটাইয়া যে বর্ণসাঙ্কর্য্যের প্রশ্রয় দেয়, তাহা অপ্রাকৃত, অস্বাভাবিক এবং অত্যন্ত কৃত্রিম। কিন্তু যে পক্ষিপালকদিগের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনয়ন করা হয়, তাঁহারই এই নবীন আশ্রমপন্থীদিগের বহু পূর্ব্বে মুক্ত অবস্থায় স্বাধীন পাখীর আহার বিহার ইত্যাদি লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছেন যে, সেখানেও বিভিন্নজাতীয় পাখীদের মধ্যে অবাধ যৌনসম্মিলনের ফলে বর্ণসঙ্করের উদ্ভব হইতেছে। বরং এক্ষেত্রে পক্ষিপালক স্পর্দ্ধা করিয়া বলিতে পারেন যে, তিনি সাবধান হইয়া যে যে উপায় অবলম্বন করিয়া খাঁচার মধ্যে বর্ণসঙ্কর সৃষ্টির সহায়তা করেন, তাহা অনেক সময়ে অন্ধ instinct-প্রণোদিত হইয়া বনে জঙ্গলে যে সকল বর্ণসঙ্কর প্রসূত হয়, তাহাদের অপেক্ষা অনেকাংশে অধিকতর উন্নত। শুধু তাহাই নহে, এই প্রকার খাঁচার সাহায্যে hybrid culture বা বর্ণশাঙ্কর্য্যানুশীলন করিলে আমরা পাখীর আদিম প্রকৃতিগত দেহাবয়ব সম্বন্ধে অনেক বিষয় জানিতে পারি; প্রথমে তাহার কি প্রকার রং ছিল? সে রংটা একেবারে বিলুপ্ত হইল অথবা রূপান্তরিত হইল? নানা প্রকার পরীক্ষা করিয়া আবার কোনরূপে পুং স্ত্রী পক্ষিযুগলকে অনুকূল অবস্থার মধ্যে সংস্থাপিত করিয়া আমরা সেই সমস্ত অতীত ইতিহাসের লুপ্ত কাহিনী পুনরুদ্ধার করিয়া দিতে পারি, এ কথায় পণ্ডিতগণ দ্বিধা করিতেছেন না। অতএব এই hybrid culture লইয়া কেহ যদি তাঁহাদিগকে দোষ দিতে চেষ্টা করেন, তাহাতে পাণ্ডিত্যের অথবা সূক্ষ্মদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায় না।

 খাঁচায় পুষিয়া পক্ষিপালন করার বিরুদ্ধে আর একটা অভিযোগ