পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১৩৭

 মেঘদূতে যে চক্রবাকের উল্লেখ দেখিতে পাই তাহা যে হংসশ্রেণীভুক্ত, এ কথা বোধ হয় অনেকেই জানেন না। সাধারণতঃ আমাদের দেশে ইহারা “চকাচকী”চক্রবাক নামে খ্যাত। ইহাদের বৈজ্ঞানিক নাম casarca rutila; ইংলণ্ডে Brahminy Duck বা Ruddy Goose নামে ইহারা পরিচিত। চক্রবাকের অপর তিনটি পর্য্যায় আমরা অমরকোষে পাই,—“কোকশ্চক্রশ্চক্রবাকো রথাঙ্গাহ্বয়নামকঃ”। প্রবাদ আছে যে, চক্রবাক-মিথুন সারাদিন একত্র অবস্থান করিয়া দিবাবসানে পৃথক্ হইয়া যায়। পক্ষী রহিল নদীর এপারে, পক্ষিণী পরপারে; এই অবস্থায় পরস্পর পরস্পরকে ডাকাডাকি করিতে থাকে। বিদেশী পক্ষিতত্ত্ববিদ্ অনেকে স্বকর্ণে নদীর উভয় পার্শ্ব হইতে নিশীথে এই প্রকার অবিরাম পক্ষিকণ্ঠধ্বনি শুনিয়া ব্যাপারটি লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন[১]। কিন্তু বৈজ্ঞানিক হিসাবে এবং বাস্তব পক্ষিজীবনের দিক্‌ হইতে দেখিলে এই চকাচকীর বিরহপ্রসঙ্গ কতদূর সত্য, তাহা আজ পর্য্যন্ত কেহ যে ভাল করিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন, এমন মনে হয় না। দিবাভাগে উহারা যে যুগ্মাবস্থায় নদীতটে একত্র অবস্থান করে, তাহা মিঃ ব্লান্‌ফোর্ড লক্ষ্য করিয়াছেন;—

 “In India this species is very common on all rivers of any size, generally sitting in pairs on the land by the riverside during the day.”

 কিন্তু দিবাবসানে তাহারা একত্র বাস করে কি না, তাহার কোন স্পষ্ট উল্লেখ কোথাও দেখিতে পাই না[২]

  1. “Who is there, when travelling by river during the winter months, has not heard at night the warning call of Kwanko, Kwanko, repeated at intervals?—this call seeming often to come and being answered from opposite banks.”—Small Game Shooting in Bengal by “Raoul,” p. 93.
  2. হিউম্ ও মার্শ্যাল রচিত Game Birds of India, Burmah and Ceylon