পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাখীর কথা

আধিক্যই শাবকের মৃত্যুর কারণ হইয়া দাঁড়ায়। এই পালন করিবার ও ভালবাসিবার ইচ্ছা বালকের বয়সের সঙ্গে-সঙ্গে বর্দ্ধিত হয়।

 সৃষ্ট প্রাণিসমূহের মধ্যে পাখীর প্রতি মানুষের পক্ষপাতিত্বের কারণ এই যে, পাখীরা অতি সহজে নেত্রপথবর্ত্তী হইয়া উহাদের উজ্জ্বল বর্ণ এবং মধুর কণ্ঠস্বরের দ্বারাপক্ষীর প্রতি মানুষের পক্ষপাতিত্বের কারণ আমাদের চিত্ত আকর্ষণ করে। পক্ষপুটের উপর নির্ভর করিয়া ইহারা স্বেচ্ছায় যথাতথা উড়িয়া বেড়াইতে সমর্থ। ইহাদের স্বভাবসুলভ চঞ্চল গতি অনায়াসেই ইহাদিগকে শত্রুর আক্রমণ হইতে রক্ষা করিয়া থাকে। অপর জন্তুদিগকে ভয়ে-ভয়ে বিচরণ করিতে হয় বলিয়া উহারা সহজে আমাদের নয়নগোচর হয় না। উহাদের মধ্যে কেহ রাত্রিকালে আপনাকে নিরাপদ মনে করিয়া গহ্বর হইতে বহির্গত হয়; কেহ বা নিবিড় অরণ্যমধ্যে সন্তর্পণে বিচরণ করে; কিছুমাত্র শব্দ হইলেই চকিতনয়নে চারিদিকে নিরীক্ষণ করিতে থাকে। পক্ষিজাতির চাক্‌চিক্যময় ক্ষুদ্র সুকোমল অবয়ব, শ্রবণ-মনোহর মধুরাস্ফুট ধ্বনি, উহাদের অবাধ-ললিত গতি ও অসহায় জীবন অতর্কিতভাবে আমাদের হৃদয়ে এক অনুরাগ-মাখা ভাবের সঞ্চার করে। এই নিমিত্ত পাখীরা চিরযুগ ধরিয়া মানুষের মনে বিশ্বস্ততাপাশে আবদ্ধ। মানবের ক্রিয়াকলাপে, আচারব্যবহারে, গল্পে, কবিতায়, প্রবাদে, ছড়ায় এই ভাবের অভিব্যক্তি যথেষ্ট পরিলক্ষিত হয়।

 পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে যে, পক্ষিপালন-প্রথা পৃথিবীর প্রায় সকল জাতির মধ্যে বিদ্যমান। এই প্রথা এত প্রাচীন যে,পক্ষিপালনপ্রথা সার্ব্বভৌমিক কেহ সম্যক্‌রূপে ইহার উৎপত্তিকাল নিরূপণ করিতে পারেন না। বিহঙ্গ-তত্ত্ববিদ্ ডাক্তার ব্যট্‌লার (Dr. A. G. Butler) বলেন যে, সম্ভবতঃ প্রাগৈতিহাসিক যুগে এই পালন-প্রথার উৎপত্তি