পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১৭১

অনুকূল পরিবেষ্টনীর মধ্যে চিত্রিত দেখিতেছি। আশ্বিন কার্ত্তিক হইতে আসন্ন বর্ষা পর্য্যন্ত ইহাকে ভারতবর্ষের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে বিচরণ করিতে দেখা যায়। অতএব প্রচণ্ড নিদাঘে কামিনীর নূপুরনিক্কণ যদি “হংসরুতানুকারী” বলিয়া ভ্রম হয়, তাহাতে বিস্ময়ের কিছুই নাই; এবং তাহা অবাস্তব বলিয়া উড়াইয়া দেওয়া যায় না।

 যে হংসটি কাদম্ব নামে পরিচিত, তাহার আর একটি আখ্যা কলহংস। অমরকোষে দেখিতে পাই—“কাদম্বঃ কলহংসঃ স্যাৎ”। অভিধানরত্নমালায় এইরূপ লেখা আছে—কাদম্ব“পক্ষৈরাধূসরৈর্হংসাঃ কলহংসা ইতি স্মৃতাঃ”। অর্থাৎ ইহার পক্ষ ধূসরবর্ণ এবং ইহা কলহংস নামে পরিচিত। মেঘদূতপ্রসঙ্গে আমরা পাঠকপাঠিকার সহিত একজাতীয় হংসের পরিচয় করাইবার চেষ্টা করিয়াছিলাম, তাহার ইংরাজি নাম Grey goose;—ইহার অঙ্গে ভস্মবর্ণের বা ধূসরবর্ণের ছায়া স্বল্পাধিক পরিমাণে লক্ষিত হয়। ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে ইহা রাজহাঁস বা কড়হাঁস নামে প্রসিদ্ধ। ইহার কণ্ঠস্বর সুমিষ্ট। পাখী শিকার করিতে গিয়া শ্বেতাঙ্গেরা ইহার কণ্ঠধ্বনিতে মুগ্ধ হইয়াছেন। মার্শ্যাল ও হিউম প্রণীত Game Birds of India, Burmah and Ceylon নামক পুস্তকে এইরূপ লিপিবদ্ধ আছে[১]

 “The cackle of a large flock flying overhead at night, high in air, is most sonorous and musical, and there are few sportsmen through whose hearts it does not send a pleasant thrill.”

 এই ansirinæ জাতিভুক্ত হাঁসটি ঐ কবিবর্ণিত কলহংস বা কাদম্ব। শরৎঋতুতে ভারতবর্ষে ঝাঁকে ঝাঁকে ইহারা উড়িয়া আসে।

  1. Vol. III, p. 60.