পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৮
পাখীর কথা

দেখিয়াছ? এই সকল লক্ষণে তুমি তাহাকে চিনিতে পারিবে;—তাহার চাঁদের মত মুখ, হংসের ন্যায় গতি—

ণিসম্মই মিঅঙ্কসরিসে বঅণে হংসগই
এ চিণ্‌হে জাণীহিসি আঅক্‌খিউ তুজ্‌ঝ মই।

হে শুক্লাপাঙ্গ নীলকণ্ঠ ময়ূর! তুমি কি আমার দীর্ঘাপাঙ্গা, আমার মূর্ত্তিমতী উৎকণ্ঠা-স্বরূপা বনিতাকে দেখিয়াছ—

নীলকণ্ঠ মমোৎকণ্ঠা বনেঽস্মিন্ বনিতা ত্বয়া।
দীর্ঘাপাঙ্গা সিতাপাঙ্গ দৃষ্টা দৃষ্টিক্ষমা ভবেৎ॥

কৈ, আমাকে উত্তর না দিয়া তুমি নৃত্য করিতেছ কেন? এই আনন্দের কারণ কি? ওঃ বুঝিয়াছি—আমার প্রিয়ার বিনাশ হেতু ইহার ঘনরুচির মৃদুপবনবিভিন্ন কলাপ নিঃসপত্ন হইয়াছে। নহিলে, উর্ব্বশীর করধৃত কুসুম-সনাথ রতিবিগলিতবন্ধ কেশপাশ বিদ্যমান থাকিলে, এই ময়ূর-কলাপের স্পর্দ্ধা কোথায় থাকিত? যাক্; পরব্যসনে যে আমোদ পায়, তাহাকে আর জিজ্ঞাসা করিবার প্রয়োজন নাই। এই যে, জম্বুবিটপমধ্যে পরভৃতা আতপান্তে সংধুক্ষিতমদা হইয়া বসিয়া আছে, ইহাকে জিজ্ঞাসা করি। এ ’ত পাখীদিগের মধ্যে পণ্ডিত—বিহগেষু পণ্ডিতৈষা জাতিঃ। হে মধুরপ্রলাপিনি পরভৃতে, পরপুষ্টে! তুমি কি আমার প্রিয়াকে দেখিয়াছ? * * * রাজা তাহাকে “মদনদূতী” সম্বোধনে অভিহিত করিয়া অনেক অনুনয় করিলেন; কিন্তু সেই বিজ্ঞ পাখীটি নিশ্চিন্ত মনে জম্বুবৃক্ষ-ফল ভক্ষণ করিয়া উড়িয়া গেল। * * * * * * নূপুর-শিঞ্জিতের মত ও কি শুনা যায়? হা ধিক! এ ত’ মঞ্জীরধ্বনি নয়। দিঙ্মণ্ডল মেঘশ্যাম দেখিয়া মানসোৎসুকচিত্ত রাজহংস কূজন করিতেছে। এই সমস্ত মানসোৎসুক রাজহংস এই সরোবর হইতে উড়িয়া যাইবার পূর্ব্বে ইহাদিগকে আমার প্রিয়ার কথা জিজ্ঞাসা করি।—হে জলবিহঙ্গরাজ!