পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১৯৯

তুমি মানস সরোবরে কিছু পরে যাইও; একবার তোমার বিসকিসলয় পাথেয়টুকু রাখ; আবার তুমি তুলিয়া লইও। আমার দয়িতার সংবাদটুকু দিয়া আমাকে শোকমুক্ত কর। রে হংস! তুই যদি সরোবরতটে আমার নতভ্রূ প্রিয়াকে না দেখিয়া থাকিস্, তাহা হইলে কেমন করিয়া তুই তাহার কলগুঞ্জিত গতিভঙ্গিটুকু চোরের মত অপহরণ করিলি। তুই আমার প্রিয়াকে ফিরাইয়া দে। জঘনভারমন্থরা প্রিয়ার গতি দেখিয়া তুই নিশ্চয়ই তাহা চুরি করিয়াছিস। * * * * * * একি! চৌর্য্যাপরাধে দণ্ডিত হইবার ভয়ে রাজার নিকট হইতে এ যে পলায়ন করিল! আচ্ছা, আর কাহাকেও জিজ্ঞাসা করি। এই যে প্রিয়াসহায় চক্রবাক রহিয়াছে; ইহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া দেখি। হে গোরোচনা-কুঙ্কমবর্ণ চক্রবাক! আমাকে বল, মধুবাসরের রঙ্গিণী আমার প্রিয়াকে তুমি কি দেখ নাই? হে রথাঙ্গ-নামধেয় বিহঙ্গ! রথাঙ্গশ্রোণিবিম্বা স্ত্রী কর্ত্তৃক পরিত্যক্ত এই রথী তোমাকে প্রশ্ন করিতেছে, তুমি উত্তর দাও। চুপ করিয়া রহিলে কেন? আমার অনুমান হয় যে, তোমারও অবস্থা আমারই মত। সরোবরবক্ষে তোমার ও তোমর পত্নীর মধ্যে সামান্য নলিনীপত্রের ব্যবধান থাকিলেও তুমি তোমার জায়া বহুদূরে আছে মনে করিয়া সমুৎসুক হইয়া বিলাপ করিতে থাক। জায়াস্নেহবশতঃ এই যে তোমার পৃথক্‌স্থিতিভীরুতা, কেন তবে আমার মত প্রিয়াজনবিরহবিধুরের প্রতি তুমি এমন প্রবৃত্তিপরাঙ্মুখ?

সরসি নলিনীপত্রেণাপি ত্বমাবৃতবিগ্রহাং
ননু সহচরীং দূরে মত্বা বিরৌষি সমুৎসুকঃ।
ইতি চ ভবতো জায়াস্নেহাৎ পৃথক্‌স্থিতিভীরুতা
ময়ি চ বিধুরে ভাবঃ কোঽয়ং প্রবৃত্তিপরাঙ্মুখঃ॥

উন্মাদগ্রস্ত রাজা ধীরভাবে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করিতে পারি-