পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
পাখীর কথা

চিনিলেন। দুই একটি কথার পর তাপসী সত্যবতী প্রস্থানোদ্যতা হইলে, বালকটিও তাহার অনুগামী হইতে চাহিল। রাজা তাহাতে বাধা দিলেন। ছেলেটি বলিল, “তবে যে ময়ূরটি আমার অঙ্কে শিখণ্ডকণ্ডূয়নে সুখবোধ করিয়া আরামে নিদ্রা যাইত, সেই জাতকলাপ শিতিকণ্ঠ শিখীকে আমার নিকট পাঠাইয়া দাও।” তাপসী বলিলেন—আচ্ছা, তাহাই করিতেছি। তাপসী চলিয়া গেলেন। পুরুরবার আনন্দে বিষাদের কালিমা আসিয়া পড়িল। ইন্দ্রের আদেশ স্মরণ করিয়া জননী উর্ব্বশী, পুত্র ও স্বামীকে পরিত্যাগ করিয়া দেবরাজ সমীপে প্রত্যাবর্ত্তন করিবার জন্য প্রস্তুত হইলেন। উর্ব্বশীর আসন্ন বিরহে ম্রিয়মাণ রাজা পুত্রের উপর রাজ্যভার অর্পণ করিয়া বনগমনের ব্যবস্থা করিতেছেন, এমন সময়ে দেবর্ষি নারদ তথায় উপস্থিত হইয়া মহেন্দ্র-সন্দেশ শুনাইলেন—“সুরাসুরের যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী; আপনি সেই যুদ্ধে আমার সহায় হউন; শস্ত্র ত্যাগ করিবেন না। আপনি যতদিন জীবিত থাকিবেন, এই উর্ব্বশী আপনার সহধর্ম্মচারিণী থাকিবেন।”

 কুমারের যৌবরাজ্যাভিষেকের সময় সমস্ত চরাচরের কল্যাণকামনার সঙ্গে সঙ্গে এই নাটকের পরিসমাপ্তি হইল।

 এখন বক্তব্য এই যে, নাটকের গল্পাংশের প্রতি প্রধানতঃ পাঠকের মন আকৃষ্ট করিবার জন্য আমি আগ্রহ প্রকাশ করিতেছি না। কাব্য হিসাবে বা চরিত্রাঙ্কনের দিক্ হইতে ইহার বিচিত্র সৌন্দর্য্য পণ্ডিত-সমাজের অগোচর নাই। আমি বিশেষ ভাবে এইটি বলিতে চাই যে, নাট্যোল্লিখিত ব্যক্তিগণের বর্ণিত জীবনকাহিনীর সঙ্গে মুখ্যভাবে অথবা গৌণভাবে বিবিধ বিহঙ্গজাতি অত্যন্ত সহজে মিশিয়া গিয়াছে; এবং সেই মিশ্রণে উভয়েরই চিত্র সম্যক্‌রূপে পরিস্ফুট হইয়াছে,—অথচ সমস্তটা বাস্তব সত্য হইতে রেখামাত্র বিচলিত হয় নাই। বিহঙ্গ-তত্ত্বের উপর কবির