পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৮
পাখীর কথা

ধরিলে কোকিলার যে অবস্থা হয়, মালবিকারও সেই অবস্থা।’ মালবিকা দেবীর পরিচারিকা কর্ত্তৃক বকুলাবলিকার সহিত ভূগর্ভস্থ কোষাগার মধ্যে অবরুদ্ধ হইয়াছে। রাণীর দাসী মালবিকা যে রাজার প্রণয়পাত্রী হইবে ইহাই রাণীর ক্রোধের কারণ। বিষণ্ণ রাজা বলিলেন,—হায়!

মধুরস্বরা পরভৃতা ভ্রমরী চ বিবুদ্ধচূতসঙ্গিন্যৌ।
কোটরমকালবৃষ্ট্যা প্রবলপুরোবাতয়া গমিতে॥

মধুরকণ্ঠী কোকিলা ও ভ্রমরী উভয়ে যেমন বিকসিত সহকারকুসুমের সংসর্গে থাকে, উহারা উভয়েও সেইরূপ একত্র বাস করিত। এখন প্রবল পুরোবাতের সঙ্গে অকালবৃষ্টি তাহাদিগকে কোটরগত করাইল।

 কিন্তু সুচতুর বয়স্য কৌশল করিয়া স-সখী মালবিকার উদ্ধার-সাধন করিয়া তাহাদিগকে সমুদ্রগৃহে রাখিয়া আসিয়া রাজাকে তথায় লইয়া আসিলেন। তাঁহাদিগের বিশ্রম্ভালাপের ব্যবস্থা করিয়া দিয়া বিদূষক দ্বাররক্ষক হইয়া রহিলেন। সহসা সখী নিপুণিকাকে সঙ্গে লইয়া রাণী ইরাবতী সেখানে উপস্থিত হইলেন। কিছুই গোপন রহিল না। বয়স্য আক্ষেপ করিয়া বলিলেন—“হায়! কি অনর্থ উপস্থিত! বন্ধনভ্রষ্ট গৃহপালিত কপোত বিড়ালীর দৃষ্টিপথে পতিত হইল।” কিন্তু একটা তুচ্ছ ঘটনায় রাজা আসন্ন বিপদ্ হইতে মুক্তিলাভ করিলেন। রাজকুমারী বসুলক্ষ্মী একটা বানরের ভয়ে অত্যন্ত ভীতা হইয়াছেন, এই সংবাদ পাইয়া রাণী অনুনয় করিয়া বলিলেন—কুমারীকে সান্ত্বনা দিবার জন্য আর্য্যপুত্র ত্বরান্বিত হউন।

 পঞ্চম অঙ্কে বৈতালিক বিদিশাধিপতি অগ্নিমিত্রের যশোগান করিতেছে—

পরভৃতকলব্যাহারেষু ত্বমাত্তরতির্মধুং
নয়সি বিদিশাতীরোদ্যানেষ্বনঙ্গ ইবাঙ্গবান্।