পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
২০৯

যেমন রতি-সহচর মন্মথ পরভৃত কলকূজনে বসন্তের আবির্ভাব প্রকাশ করিয়া থাকেন—অঙ্গবান্ অনঙ্গের মত আপনিও সেইরূপ বিদিশাতীরস্থ উদ্যানে শোভা বিস্তার করিতেছেন।

 এদিকে দৈবক্রমে যে মালবিকার চরণস্পর্শে অশোক তরু প্রস্ফুটিতপুষ্পভারনম্র হইয়া পড়িয়াছে, তাহাকে আর বন্দিনী করিয়া রাখা চলে না; রাণী তাহাকে বধূবেশে সজ্জিত করিয়াছেন; এবং পরিব্রাজিকা ও পরিজন সমভিব্যাহারে তাহাকে লইয়া রাজসমীপে উপস্থিত হইয়াছেন। রাজা মালবিকাকে দেখিয়া আপনাআপনি বলিতেছেন—

অহং রথাঙ্গনামেব প্রিয়া সহচরীব মে।
অননুজ্ঞাতসম্পর্কা ধারিণী রজনী নৌ॥

 আমি চক্রবাক এবং প্রিয় মালবিকা সহচরী চক্রবাকী; দেবী ধারিণী যেন রাত্রি স্বরূপিণী—যাহার অনুজ্ঞা ব্যতীত আমাদের উভয়ের মিলন হইতে পারে না।

 অতঃপর মহাকবি সুকৌশলে রাজার নিকটে মালবিকার বংশপরিচয় করাইলেন;—কেমন করিয়া মালব-রাজকুমারী মালবিকা দস্যু কর্ত্তৃক অপহৃত হইয়া, অবশেষে বিদিশারাজ-ভবনে আশ্রয়লাভ করিয়াছিলেন, তাহারই বর্ণনাপ্রসঙ্গে আমরা জানিতে পারি যে, তদ্দেশীয় দস্যুরা পৃষ্ঠদেশে ময়ূরপুচ্ছ আভরণরূপে ব্যবহার করিত।

তূণীরপট্টপরিণদ্ধভুজান্তরাল-

মাপার্ষ্ণিলম্বিশিখিপিচ্ছকলাপধারি।

 ইহার পর রাত্রিস্বরূপিণী রাণী ধারিণী, চক্রবাকমিথুনরূপ মালবিকাগ্নিমিত্রের মিলনের অনুজ্ঞা প্রদান করিলেন। ইরাবতীর কোপ প্রশমিত হইল।

 ইহাই মালবিকাগ্নিমিত্রের গল্পাংশ। পাঠক অবশ্যই লক্ষ্য করিয়াছেন, নায়ক-নায়িকাবর্ণনা প্রসঙ্গে কেমন সহজে ময়ূর, চাতক,