পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১০
পাখীর কথা

কোকিল, সারস, গৃহকপোত, রথাঙ্গ প্রভৃতি পাখীগুলি আসিয়া পড়িয়াছে। ইহাদিগের মধ্যে অনেকগুলিকেই আমরা উর্ব্বশীপুরুরবার সম্পর্কে পাইয়াছি। আবার নবীন পরিবেষ্টনীর মধ্যে শকুন্তলার উপাখ্যানে উহাদিগের দর্শনলাভ করিবার আশা আছে। অতএব অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকখানির কিঞ্চিৎ আলোচনা করিয়া, আমরা আধুনিক বৈজ্ঞানিক রীতি অনুসারে বিহঙ্গগুলির সম্যক্ পরিচয়লাভের চেষ্টা করিব।

 অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকের প্রথম অঙ্কে দ্রুত পলায়মান মৃগের অনুসরণে তপোবন-সান্নিধ্যে সমাগত রাজা দুষ্মন্ত ঋষিগণ কর্ত্তৃক সহসা আশ্রমমৃগের হননে বাধা পাইয়া, কুলপতির আশ্রমদর্শনের অভিলাষে প্রবেশ করিতেছেন, এমন সময়ে সারথিকে বলিলেন—“সূত! কেহ না বলিলেও, এটি যে তপোবন, তাহা বেশ বুঝা যাইতেছে।” সারথি জিজ্ঞাসা করিল—“কিরূপ?” রাজা বলিলেন—“তুমি কি দেখিতে পাইতেছ না? এখানে—

নীবারাঃ শুকগর্ভকোটরমুখভ্রষ্টাস্তরূণামধঃ
প্রস্নিগ্ধাঃ ক্বচিদিঙ্গুদীফলভিদঃ সূচ্যন্ত এবোপলাঃ।
বিশ্বাসোপগমাদভিন্নগতয়ঃ শব্দং সহন্তে মৃগা-
স্তোয়াধারপথাশ্চ বল্কলশিখানিষ্যন্দরেখাঙ্কিতাঃ॥

 —যে বৃক্ষকোটরের মধ্যে শুকপক্ষী নীড় রচনা করিয়াছে, তাহার মুখ হইতে ভ্রষ্ট হইয়া নীবার শস্যগুলি তরুমূলে পতিত রহিয়াছে; যে সকল উপল সাহায্যে ইঙ্গুদীফল ভগ্ন করা হয়, তাহাতে সংলগ্ন ফলনির্য্যাস তপোবনের সূচনা করিয়া দিতেছে। বিশ্বাস উপগম হেতু নিশ্চল হইয়া মৃগগণ রথশব্দ সহ্য করিতেছে; আশ্রমবৃক্ষের বল্কলশিখা হইতে জলক্ষরণে রেখাঙ্কিত তোয়াধারপথগুলিও তপোবনের সূচনা করিতেছে”।

 নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কের প্রারম্ভে মৃগয়াশীল রাজার সহচর বিদূষক