অদৃশ্য প্রাণী কর্ত্তৃক আক্রান্ত হইয়া সহসা সে আর্ত্তনাদ করিতে লাগিল। কি বিপদ্ ঘটিল, তাহা জানিবার নিমিত্ত কঞ্চুকীর উপর ভার পড়িল, সে দেখিয়া আসিয়া রাজসমীপে কাঁপিতে কাঁপিতে জানাইল—যে মেঘপ্রতিচ্ছন্দ প্রাসাদশিখরে গৃহনীলকণ্ঠ অনেকবার বিশ্রাম করিয়া আরোহণ করিতে সমর্থ হয়, তথা হইতে কোনও অপ্রকাশিত মূর্ত্তি আপনার বয়স্যকে পীড়ন করিতে করিতে কোথায় লইয়া গিয়াছে—
তস্যাগ্রভাগাদ্গৃহনীলকণ্ঠৈ-
রনেকবিশ্রামবিলঙ্ঘ্যশৃঙ্গাৎ।
সখা প্রকাশেতরমূর্ত্তিনা তে
কেনাপি সত্ত্বেন নিগৃহ্য নীতঃ॥[১]
রাজা ভয় নাই বলিয়া সহসা গাত্রোত্থানপূর্ব্বক ধনুর্ব্বাণহস্তে বয়স্যকে অদৃশ্য শত্রুর হাত হইতে রক্ষা করিবার জন্য বলিলেন—শত্রু যেই হউক, আমার শস্ত্র তাহাকে সংহার করিয়া মাধব্যকে রক্ষা করিবে, হংস যেমন জলমিশ্রিত দুগ্ধ হইতে সলিলাংশ পরিত্যাগ করিয়া দুগ্ধকে গ্রহণ করে।
যো হনিষ্যতি বধ্যং ত্বাং রক্ষ্যং রক্ষতি চ দ্বিজম্।
হংসো হি ক্ষীরমাদত্তে তন্মিশ্রা বর্জ্জয়ত্যপঃ॥
তৎক্ষণাৎ মাধব্যকে ছাড়িয়া দিয়া মাতলি রাজসমক্ষে উপস্থিত হইলেন এবং দেবরাজের সন্দেশ জ্ঞাপন করিয়া রাজা দুষ্মন্তকে সুরলোকে লইয়া গেলেন।
নাটকের সপ্তম অঙ্কে, দেবরাজ ইন্দ্রের আজ্ঞা পালন করিয়া রাজা মাতলির সহিত রথাধিরূঢ় হইয়া আকাশপথে প্রত্যাবর্ত্তন করিতেছেন; রথচক্রের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া রাজা বলিলেন—আমরা মেঘমণ্ডলে অবতরণ করিয়াছি। ঐ দেখ—
- ↑ ন্যায়পঞ্চানন-সঙ্কলিত নাটকেই এই শ্লোক দেখা যায়।