পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৬
পাখীর কথা

তাহাই নহে; এক স্থলে তাহার রূপবর্ণনা পাওয়া যাইতেছে; ইহা আমাদের বৈজ্ঞানিক আলোচনার পক্ষে যথেষ্ট সাহায্য করিবে। চক্রবাক যে “প্রিয়াসহায়,” তাহা সকলকেই মানিয়া লইতে হইবে; কিন্তু সে যে গোরোচনাকুঙ্কুমবর্ণ, তাহা কি সকলে লক্ষ্য করিয়াছেন? ব্লানফোর্ডের পুস্তকে[১] চক্রবাক বা Casarca rutila পাখীর বর্ণবৈচিত্র্য সম্বন্ধে এইরূপ লেখা আছে—Head and neck buff (গোরোচনাবর্ণ), generally rather darker on the crown, cheeks, chin and throat, and passing on the neck into the orange brown or ruddy ochreous (কুঙ্কুমবর্ণ) of the body above and below। পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে, চক্রবাক প্রিয়াসহচর ইহা সকলকেই মানিয়া লইতে হইবে;—কেবল যে আমাদের দেশে এইরূপ কবিপ্রসিদ্ধি আছে বলিয়া আমরা অবিচারে ইহা মানিয়া লইব, তাহা নহে। বিদেশীয় পক্ষিতত্ত্বজ্ঞেরা এ বিষয়ে অনেকটা অনুকূল সাক্ষ্য দিতেছেন। এই জাতীয় বিহঙ্গ মিথুনাবস্থায় তাঁহাদের নয়নগোচর হইয়াছে। তবে এ কথা তাঁহারা জোর করিয়া বলিতে পারেন নাই যে, রজনী চক্রবাক মিথুনের মধ্যে বিরহ ঘটাইয়া দেয়; কিন্তু ইহা স্পষ্ট করিয়া বলা হইয়াছে যে, দিবাভাগে চক্রবাক সহচরীসঙ্গত হইয়া বিচরণ করে। ধারিণী যে রজনীর মত নায়ক-নায়িকার মধ্যে বিরহের ব্যবচ্ছেদ আনিয়া তাহাদিগকে চক্রবাক-মিথুনের নৈশ অভিশাপগ্রস্ত করিয়াছে, মহাকবিবর্ণিত এই বিরহব্যাপার বাস্তবপক্ষে কতটা সত্য, তাহা বিচারসাপেক্ষ। নিশীথে শীতকালে নদীবক্ষে বিচরণ করিবার সময় চক্রবাক চক্রবাকীর করুণ কণ্ঠধ্বনি পাশ্চাত্য পক্ষিতত্ত্ববিদের কর্ণগোচর হইয়াছে,—This call seeming often to come and being answered from opposite

  1. Fauna of British India, Birds, Vol. IV.