পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩০
পাখীর কথা

স্বরূপ পরিচয় দিতে পারা যাইবে, তখন একটা কূট বৈজ্ঞানিক সমস্যার সমাধান হইবে।

ময়ূর

 কালিদাসের কাব্য-সাহিত্যে ময়ূরকে এত বেশী দেখিতে পাওয়া যায় যে, মেঘদূতেই বলুন আর মালবিকাগ্নিমিত্রেই বলুন, কোথাও তাহাকে অন্বেষণ করিবার আয়াস স্বীকার করিতে হয় না। একটা বিষয় বোধ করি পাঠকগণ কালিদাসের নাটকে লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন—ময়ূরকে গৃহপালিত অবস্থায় মানবাবাসে দেখিতে পাওয়া যাইতেছে। আসন্ন বর্ষায় মেঘদূতে যে ভবন-শিখীকে দেখিয়াছি, তাহাকে স্বাধীন ভাবে পর্ব্বতে পর্ব্বতে বিচরণ করিতেও দেখা গিয়াছে। এখানে ময়ূরকে শুধু বর্ষায় দেখিতেছি না, প্রখর রৌদ্রে সে আলবালে আশ্রয় গ্রহণ করিতেছে; দিবাবসানে বাসযষ্টির উপর চিত্রার্পিতের মত সে বসিয়া থাকে; মাতৃরূপিণী শকুন্তলার আসন্ন বিরহে সে নৃত্য পরিত্যাগ করিয়াছে; রাজপ্রাসাদে মধ্যাহ্নকালে ঘূর্ণ্যমান জলযন্ত্র হইতে উৎক্ষিপ্ত বারিকণা দেখিয়া পিপাসা নিবৃত্তির জন্য সে সেই দিকে ধাবিত হইতেছে; সে আবার রাজপুত্রের অঙ্কে শিখণ্ডকণ্ডূয়নে সুখবোধ করিয়া আরামে নিদ্রা যাইতেছে—মানুষের সঙ্গে তার এত ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ দাঁড়াইয়া যায়! এস্থলে এই domesticationটাই বিশেষভাবে বৈজ্ঞানিকের আলোচ্য। এই pavo cristatus পাখটির সম্বন্ধে পক্ষিতত্ত্বহিসাবে অন্যান্য জ্ঞাতব্য বিষয় লইয়া অন্যত্র আলোচনা করিয়াছি। এই নীলকণ্ঠ বিহঙ্গ আমাদের গৃহের সহিত এমন অবিচ্ছিন্নভাবে সম্বদ্ধ হইয়া পড়ে যে, গৃহনীলকণ্ঠ শব্দটি ময়ূরের নামান্তর হইয়া দাঁড়াইয়াছে। অবশ্যই আমাদের গৃহে তাহাকে কখনও খাদ্যদ্রব্যে পরিণত করা হয় নাই। বাইবেলে দেখতে পাওয়া যায় ষে, হিব্রূরাজা সলোমনের সময়ে বিদেশ হইতে ময়ূরকে আমদানি