পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
২৩৩

কেন? এইখানে তাহার দুষ্ট প্রকৃতির প্রতি কটাক্ষ না করিয়া থাকা যায় না। যে শুককে পিঞ্জরে আবদ্ধ রাখিয়া মানুষের বুলি শিখাইয়া অতি প্রাচীনকাল হইতে আমরা পালন করিয়া আসিতেছি, তাহার মত শত্রু কৃষিজীবী মানবের খুব কমই আছে। মানুষের—সমাজবদ্ধ কৃষিজীবী মানুষের—যে কয়টি পরম শত্রু বলিয়া পরিগণিত, এই শুক তাহাদের অন্যতম—

অতিবৃষ্টিরনাবৃষ্টিঃ মূষিকাঃ শলভাঃ শুকাঃ।
প্রত্যাসন্নাশ্চ রাজানঃ ষড়েতা ঈতয়ঃ স্মৃতাঃ॥

 শস্য নষ্ট করিতে যে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, মূষিক প্রভৃতির সমকক্ষ, তাহার নীড়সমীপে যে নীবারশস্য চঞ্চুপুট-ভ্রষ্ট হইয়া ভূমিতলে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িয়া থাকিবে, ইহা আদৌ বিস্ময়কর নহে। ফ্রাঙ্ক ফিন্ বলেন—They are often extremely destructive to grain and fruit crops; এবং অন্যত্র লিখিয়াছেন—Parrots are usually not only non-provident but, like monkeys, wantonly wasteful,......with......suicidal tendency to squander their supplies। এই ব্যাপারটি কবির সূক্ষ্ম দৃষ্টিকে এড়াইতে পারে নাই।

 এই শুক ভারতবর্ষে অতি প্রাচীন কাল হইতে মানবের গৃহে পালিত হইয়া আসিতেছে; তাহার যতই দোষ থাকুক, সে মানুষের বুলি অনুকরণ করিতে পারে বলিয়াই এতাবৎ গৃহস্থের কাছে আদর পাইয়া থাকে। ইহাও লক্ষ্য করা হইয়াছে যে, তাহার এই অনুকরণপটুত্ব স্বাধীন বন্য অবস্থায় প্রকটিত হয় না। বনে জঙ্গলে সে ’ত অন্য পাখীর কিংবা পশুর কণ্ঠস্বর অথবা বিশ্বপ্রকৃতির অন্য কোনও বিচিত্র শব্দের অনুকরণ করিতে পারিত; কিন্তু যতদূর জানা গিয়াছে, সে তাহা করে না। ফ্রাঙ্ক ফিন্ বলেন—In captivity many, if not most species, display a great imitative capacity,