পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
পাখীর কথা

বৃত্তির প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া যে ইহাকে “বিহগাধম”, “শকুনিহতাশ” আখ্যা দেওয়া হইয়াছে এমন মনে হয় না; এইরূপ আখ্যাপ্রদানের তাৎপর্য্য আমরা বুঝিতে পারি, যখন পাখীটার শারীরিক গঠন এবং ইহার দেহবিনির্গত সহজ একটা দুর্গন্ধ আমাদের নেত্র এবং ঘ্রাণপথবর্ত্তী হয়। তাই ব্লানফোর্ড লিখিয়াছেন[১]—On the ground vultures are clumsy, heavy and ungainly, as foul in aspect as in smell। প্রায়ই শৈলশিখরে ইহারা বাসা নির্ম্মাণ করিয়া থাকে; তবে কতকগুলা জাতি বৃক্ষশাখায় আপনাদের গৃহস্থালী পাতিয়া লয়। পার্ব্বত্য গৃধ্রেরা সুদূর ভূভাগ হইতে আপনাদের আহার্য্য সংগ্রহ করিয়া পর্ব্বতশৃঙ্গে উড়িয়া গিয়া আহারক্রিয়া সমাপন করে। তাহাদের বিশ্রামস্থানও পর্ব্বতশিখর। মহাকবিবর্ণিত গৃধ্রের কিন্তু “নিবাসবৃক্ষে”র উল্লেখ দেখিয়া মনে হয় যে পক্ষীটা ঠিক পার্ব্বত্যজাতীয় (mountain vulture) নহে। গৃধ্রজাতীয় পাখীরা সাধারণতঃ কোনও বৃক্ষে যে বাসা নির্ম্মাণ করে এমন নহে; প্রায়ই তাহারা পার্ব্বত্য স্থানে গিরিশিখরের সমীপবর্ত্তী উচ্চ স্থানে থাকিতে ভালবাসে। নিবাস-বৃক্ষের তাৎপর্য্য এই যে, ইহারা বৃক্ষের উপর নীড় নির্ম্মাণ না করিলেও, অভ্যাস মত আহার্য্য সংগ্রহ করিয়া প্রায়ই কোনও না কোনও গাছে বসিয়া তাহা উদরস্থ করিয়া থাকে। কোনও কোনও বিশিষ্ট বৃক্ষের উপরে তাহাদিগকে এইরূপ পুনঃ পুনঃ বসিতে দেখিলে অবশ্যই মনে হইতে পারে যে সেই সকল গাছ ইহাদের নিবাসবৃক্ষ। পার্ব্বত্য গৃধ্রগণের এইরূপ roosting place পর্ব্বতশৃঙ্গ; কিন্তু যে সকল গৃধ্র ঠিক পার্ব্বত্য জাতীয় নয়, তাহাদের roosting place প্রায়ই বৃক্ষাগ্র[২]। সাধারণতঃ

  1. Ibid.
  2. কেহ কেহ বলিতে পারেন যে কোনও কোনও গ্রামে বৃক্ষাগ্রে গৃধ্ররচিত নীড় যখন দেখা যায়, তখন নিবাসবৃক্ষ কেবলমাত্র roosting place ধরিয়া লইব কেন? গাছের উপর