এখন বিক্রেমোর্ব্বশীনাটকে যে কুররীর কণ্ঠধ্বনির উল্লেখ আছে, তাহা সহসা ঈগল-বিতাড়িত উল্লিখিত ospreyর চীৎকারের সহিত মিলাইয়া দেখিলে ক্ষতি কি? নেপথ্যে সহসা আর্ত্তনাদ শুনিয়া সূত্রধার বলিয়া উঠিলেন “কিং নু খলু মদ্বিজ্ঞাপনানন্তরম্ আর্ত্তানাং কুররীণামিব আকাশে শব্দঃ শ্রূয়তে।” সাধারণতঃ Accipitres পর্য্যায়ভুক্ত পাখীগুলার কণ্ঠধ্বনি তীব্র হইলেও, ospreyর স্বরে[১] যথেষ্ট মাধুর্য্য আছে; কিন্তু যখন ঈগলপক্ষীর তাড়নায় ইহাকে মৎস্যের গ্রাস পরিত্যাগ করিতে হয়, তখন ইহার স্বর কর্কশ আর্ত্তনাদে পরিণত হয়। বিহঙ্গতত্ত্ববিৎ মিঃ উইল্সন্ ইহা বিশেষরূপে লক্ষ্য করিয়া এইরূপ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন—“A sudden scream, probably of despair and honest execration”[২]। এখন অসুর কর্ত্তৃক অপহৃত বন্দিনী উর্ব্বশীর আর্ত্তস্বর যে কুররীর কণ্ঠস্বরের অনুরূপ হইবে, অর্থাৎ ঈগলতাড়িত ospreyর কণ্ঠস্বরের মত হইবে, ইহা বিচিত্র কি?
এইবার সংস্কৃত সাহিত্যের সাহায্যে কুররের স্বরূপ পরিচয় লইতে হইবে। অমরকোষে এইটুকু আছে,—“উৎক্রোশকুররৌ সমৌ” অর্থাৎ উৎক্রোশ ও কুরর একই পাখী। এখানে কেবল নামান্তর পাওয়া গেল, আর কোনও বিশেষ পরিচয় পাইলাম না। অতএব অন্যত্র অন্বেষণ করা যাক্। বৈদ্যকশাস্ত্রে কুররের সাক্ষাৎ পাইতেছি। সুশ্রুতসংহিতায় দেখিতে পাই যে, কুরর গৃ্ধ্র-শ্যেন-চিল্লি প্রভৃতি প্রসহজাতীয় বিহঙ্গের অন্যতম। আবার উক্ত গ্রন্থেই প্লবজাতীয় হংস-সারস-কাদম্ব-কারণ্ডব প্রভৃতি বিহঙ্গগুলির মধ্যে উৎক্রোশ বিরাজ করিতেছে। এখন ব্যাপারটা দাঁড়াইল এই:—অভিধানকার