পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
পাখীর কথা

বিষময় ফল ঘটিতে পারে। এই নিমিত্ত আমরা দেখিতে পাই যে, য়ুরোপীয় পক্ষিপালকগণ দলবদ্ধ হইয়া কতিপয় ক্লব বা সমিতির সৃষ্টি করিয়াছেন। তাঁহাদিগের উদ্দেশ্য, বনে বনে পরিভ্রমণপূর্ব্বক পক্ষীদিগের স্বাভাবিক জীবন পরিদর্শন। বলা বাহুল্য, এই প্রকার পরিদর্শনের ফলে যে সমস্ত অভিজ্ঞতা লাভ হয়, আবদ্ধ বিহঙ্গগুলির পালন-ব্যাপারে উহা নিয়োজিত হইয়া যথেষ্ট সুফল প্রসব করে। আমরা যথাক্রমে উল্লিখিত উপকরণসমূহের আলোচনায় প্রবৃত্ত হইলাম।

 সর্ব্বপ্রথমে পক্ষিপালক কিরূপ বা কোন্ জাতীয় পক্ষী পালন করিতে অভিলাষী আছেন, তাহা নির্দ্ধারণ করিয়া তাঁহাকে মনোনীত পাখীগুলির রক্ষণোপযোগি স্থান ঠিক করিতে হইবে। পাশ্চাত্য প্রথা অনুসারেপিঞ্জর ও পক্ষিগৃহ পক্ষিসংরক্ষণের স্থান সাধারণতঃ দ্বিবিধ—পিঞ্জর (cage) এবং বৃক্ষাদিশোভিত পক্ষিগৃহ (aviary)। সহজে স্থানান্তরিত করিতে পারা যায়, এরূপ বৃহৎ খাঁচাও aviary নামে অভিহিত হয়। এই দুই প্রকার আবাসস্থানের মধ্য হইতে যেটি পালকের পক্ষে অনায়াসলভ্য, অথচ যাহা তাহার নির্দ্ধারিত পক্ষীর সুখ ও স্বাস্থ্যের অনুকূল, তাহাই বাছিয়া লইতে হইবে। সচরাচর আমাদের দেশে যে সকল খাঁচা ব্যবহৃত হয়, তাহা আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে নির্ম্মিত খাঁচার তুলনায় অকিঞ্চিৎকর; বস্তুতঃ সেগুলি পক্ষিরক্ষণের আদৌ উপযোগী নহে। ইহার প্রধান কারণ এই যে, পরিষ্কার করিবার সদুপায় পিঞ্জরগুলিতে না থাকায় দুর্গন্ধ এবং কীটাণুর সৃষ্টি হইয়া পাখীদিগের স্বাস্থ্যহানি করে। এই অহিতকর পিঞ্জর-সমূহের মধ্যে প্রায়ই গোলাকার খাঁচার অধিক প্রচলন দেখা যায়। ইহাকে পক্ষিগণের প্রাণনাশক একপ্রকার যন্ত্র বলিলে অত্যুক্তি হইবে না; কারণ ইহার মধ্যে উৎপতন ও উল্লম্ফনের চেষ্টায় পাখীগুলি ঘূর্ণরোগাক্রান্ত হইয়া