পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
পাখীর কথা

করিবার নিমিত্ত তাহাদিগের উপযোগী আহার্য্য ও অপরাপর আবশ্যক উপাদান নিরূপণবিষয়ে অনন্যমনা হইয়াছেন। এইরূপে উভয় সম্প্রদায়ের সমবেত চেষ্টা এবং অভিজ্ঞানের ফলে যে সকল পক্ষীকে ইতঃপূর্ব্বে আবদ্ধাবস্থায় জীবিত রাখা একান্ত অসম্ভব বলিয়া বিবেচিত হইত, ইদানীং তাহাদিগকে স্বাভাবিক খাদ্যের অভাব সত্ত্বেও কৃত্রিম আহার্য্যের সাহায্যে অসঙ্কোচে পালন করা সম্ভবপর হইয়া উঠিতেছে। এই প্রসঙ্গে মিঃ আলফ্রেড এজ্‌রার (Mr. Alfred Ezra) নামোল্লেখ না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। লণ্ডনের প্রতিকূল জলবায়ু এবং আব-হাওয়ার মধ্যে তিনি বহুক্লেশ স্বীকারপূর্ব্বক স্বভাব-চঞ্চল ও লঘুকায় দুর্গাটুনটুনির রক্ষণোপযোগী এক সুন্দর গৃহ নির্ম্মাণ করিয়াছেন।আলফ্রেড এজ্‌রার কৃতিত্ব নিরুপম সৌন্দর্য্যশালী এই জাতীয় পক্ষিগণের আহারবিধান এতদিন মানবের স্বপ্নাতীত ছিল। এজ্‌রা মহোদয় ইহাদিগের আহার্য্য এবং পালন-বিধির আবিষ্কার ও নিরূপণদ্বারা পালন-ইতিহাসের এক নূতন অধ্যায় রচনা করিতে সমর্থ হইয়াছেন। দুগ্ধ এবং মধু পিঞ্জর-টুনটুনির প্রধান খাদ্য। উষ্ণ জলের সহিত যৎসামান্য ছাতু, মধু বা শর্করা, Mellins food, condensed milk প্রভৃতি য়ুরোপীয় কৃত্রিম দুগ্ধ একত্র উত্তমরূপে মিশাইয়া যে তরল অহার্য্য প্রস্তুত হইবে, তাহাই শীতল করিয়া দুর্গাটুনটুনির বিশিষ্ট খাদ্যরূপে ব্যবহার্য্য। পিঞ্জর-বিহঙ্গগণের নিমিত্ত কৃত্রিম আহার্য্য বিধান সত্ত্বেও যে বিবিধ কীটপতঙ্গের আবশ্যকতা আছে, তাহা স্বতন্ত্ররূপে উল্লেখ করা বাহুল্য মাত্র। জীবন্ত অবস্থায় প্রায় ব্যবহৃত হয় বলিয়া বিলাতে উহারা “live food” বা “জীবন্ত খাদ্য” নামে পরিচিত; কতিপয় কীট আবার মৃত এবং শুষ্ক অবস্থায় বিহগভোজ্যরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। অপেক্ষাকৃত বৃহৎকায় মাংসাশী পাখীদিগের জন্য চড়াই প্রভৃতি ছোট ছোট পাখী অথবা মূষিক প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী খাদ্যরূপে গণ্য হয়; মাংসের টুকরাও সচরাচর এই নিমিত্ত ব্যবহৃত হয়।