পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
৪১

 পথ্যহিসাবে খাদ্যবিশেষের ব্যবস্থা পীড়িত পাখীদিগের নিমিত্ত আবশ্যক হয়। পূর্ব্বে আমরা উল্লেখ করিয়াছি যে বীজাণুভোজী পক্ষিগণের পক্ষে বালুকা অতিশয় হিতকর, কারণ ইহা তাহাদিগের পরিপাক-শক্তির বিশেষরূপে সহায়তা করে। তদ্রূপ আবার কতিপয় শ্রেণীর কীট-পতঙ্গ, কীটভোজী পাখীদিগের স্বাস্থ্যের অনুকূল। কপি, মূলা প্রভৃতি শাক-সব্‌জীর সুকোমল পত্রপথ্য বীজভোজী পাখীদিগের কোষ্ঠ-পরিষ্কারক; দুগ্ধ-মিশ্রিত রুটিও য়ুরোপীয় পালকগণ কর্ত্তৃক এই নিমিত্ত ব্যবহৃত হয়। উদরাময় রোগ নিরাকরণের জন্য দুগ্ধ-মিশ্রিত arrowroot বিস্কুটের সহিত গোটাকতক পোস্তদানা মিশাইয়া রুগ্ন পক্ষীকে খাওয়াইতে হয়। এতদ্ব্যতীত পালিত পক্ষিগণের নানাবিধ ব্যাধির প্রতীকারের নিমিত্ত বিবিধ ঔষধের প্রয়োগ সময়ে সময়ে আবশ্যক হইয়া থাকে। আবদ্ধতাই যে উহাদিগের এই সকল রোগের হেতু তাহা নহে; পরন্তু আবদ্ধাবস্থায় পাখীদিগের ব্যাধির সুচিকিৎসা হইবার সম্ভাবনা অধিক। বনে-জঙ্গলে যে উহাদিগের স্বাধীন জীবন রোগমুক্ত নহে, তাহার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। এমন কি মিঃ গ্যালোয়ে বলেন[১]—মে জুন মাসেও (অর্থাৎ যে ঋতুতে বিহঙ্গগণের স্বাভাবিক খাদ্যের অনটন নাই) যখন তিনি জীর্ণ শীর্ণ অস্থিচর্ম্মসার রুগ্ন পক্ষীকে ভূমি হইতে কুড়াইয়া পাইয়াছেন, তখন সহজেই বুঝা যায় যে পাখীদিগের স্বাধীন জীবন যে সম্পূর্ণ নিরাময়, তাহা নহে। তিনি আরও বলেন যে, বনে জঙ্গলে তাহারা ব্যাধিনাশক কোনও ঔষধ পায় না বলিয়া অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হয়।

 বস্তুতঃ, মানবদিগের মধ্যে যে সকল ব্যাধি পরিদৃষ্ট হয়, বিহঙ্গগণের

  1. “Diseases of Birds, and their treatment and cure—I.” by P. F. M. Galloway in the Avicultural Magazine, April, 1918.