পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভূমিকা

 শ্রীযুক্ত বাবু সত্যচরণ লাহা এম্ এ, বি, এল্ মহাশয় যে “পাখীর কথা” বলিয়া বই লিখিয়াছেন, সেখানি অতি অপূর্ব্ব। উহার তিন ভাগ; প্রথম, খাঁচার পাখী, দ্বিতীয়, রাষ্ট্র-সমস্যা ও পক্ষিতত্ত্ব, তৃতীয়, কালিদাসের বিহঙ্গতত্ত্ব। তিনটী ভাগই অপূর্ব্ব। বাঙ্গালায় এরূপ বই একেবারেই নাই। সত্যবাবুর নিজের পাখীর সখ্ আছে। তিনি পাখী পোষেন, পাখীর চিড়িয়াখানা রাখেন। অবসর সময়ে নিজেই পাখীর সেবা করেন, দেশ বিদেশ হইতে পাখী সংগহ করেন এবং পাখীর রঙ্গীন ছবি আঁকান ও সংগ্রহ করেন। সুতরাং তিনি পাখীর বিষয়ে কোন কথা বলিলে আমাদের মন দিয়া শোনা আবশ্যক। এবার সংক্ষেপে তিনি গুটিকতক ভাল কথা বলিয়াছেন।

 খাঁচার পাখী বিষয়ে তাঁহার জ্ঞান বেশী। কেন না তিনি খাঁচা দিয়াই পাখীপোষা আরম্ভ করেন, এখনও খাঁচার দিকেই তাঁহার টানটা বেশী। দ্বিতীয় ভাগে পাখীর আশ্রম করার কথায় তিনি যেন একটু খাঁচার দিকেই টান দেখাইয়াছেন। আশ্রম কর, একটা প্রকাণ্ড বাগান করিয়া তাহাতে পাখী স্বচ্ছন্দে যাতে আসে, স্বচ্ছন্দে বাসা করে, গৃহস্থালী করে, তাহা দেখ। তাহাকে পুষিও না, তাহাকে আবদ্ধ করিও না। সে আপন মনে যাহা করে দেখিয়া যাও ও টুকিয়া যাও। খাঁচায় পুরিয়া রাখিলে সে যাহা করিবে কতকটা ফরমাসী রকমে করিবে। স্বভাবে যাহা করিত, সেরূপ হইবে না। সুতরাং আশ্রম কতকটা ভাল বই কি? কিন্তু পাখীর ব্যামো হ’লে মানুষে যে যত্ন করিয়া চিকিৎসা করে, আশ্রমে কে তাহা করিবে? মানুষে নানা রকমে তাহার বাসা-বাঁধায় যে সাহায্য করে, তাহা কে করিবে?