পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
৫৩

তারযোগে একত্র সংবদ্ধ করিয়া উহার একপ্রান্তে একটি ছিদ্র রাখিতে হইবে। এই প্রকার ছোব্‌ড়ায় বাসা রচনা করিতে রামগোরা (জাভাচড়াই) এবং টিয়া জাতীয় কতিপয় পক্ষী পছন্দ করে। অনেক সময়ে নারিকেলটি চিরিয়া আভ্যন্তরীণ মালাটি নিষ্কাসিত করিবার প্রয়োজনও হয় না; কেবল নারিকেলের এক প্রান্তে ছিদ্র করিয়া মালার ভিতরের শাঁস বাহির করিয়া ফেলিয়া শুকাইয়া লইলেই, অনেক পক্ষিমিথুন অসঙ্কোচে উহাতে আশ্রয় লইয়া থাকে। কখন কখন আবার সমস্ত ছোব্‌ড়াটা বাদ দিয়া শুধু মালটার ঊর্দ্ধদেশে একটি ছিদ্র করিয়া দিলেই, ইহা মুনিয়া এবং ফিঞ্চ জাতীয় ক্ষুদ্র পক্ষিগণের নীড় রচনার পক্ষে বিশেষ উপযোগী হয়; অবশ্য মালার অভ্যন্তরস্থ শাঁস নিষ্কাসিত করিয়া দিয়া মালাটিকে শুকাইয়া লওয়া কর্ত্তব্য। মালাটির অর্দ্ধাংশ আবার বাটির মত চিৎ করিয়া এক অপ্রশস্ত তক্তায় উত্তমরূপে সংলগ্ন করিলেই Canary পক্ষীর নীড়-রচনার পক্ষে বড়ই অনুকূল হইয়া থাকে।

 ২ নম্বর চিত্রে নানাপ্রকার বাক্সের সাহায্যে নীড়াধার-নির্ম্মাণ-কৌশল প্রদর্শিত হইল। সাধারণতঃ চুরটের বাক্সে খুব অল্প খরচে অতি সহজে এই নীড়াধারগুলি তৈয়ার করিতে পারা যায়। অপেক্ষাকৃত গভীর কাঠের বাক্সে সালিক জাতীয় পক্ষী বাস করিতে খুব পছন্দ করে। ছোট ছোট বাক্স মুনিয়াজাতীয় ক্ষুদ্রকায় পক্ষীদিগের কুলায়-সঙ্কলনের বড়ই অনুকূল।

 ৩ নম্বর চিত্রে দেখিতে পাইবেন যে, গাছের গুঁড়ির সাহায্যে কিরূপ নীড়াধার প্রস্তুত হইতে পারে। যে সকল পক্ষী মুক্ত ও স্বাধীন অবস্থায় তরুকোটরে বাসা নির্ম্মাণ করিতে ভালবাসে, তাহাদিগের জন্য পক্ষিগৃহ-মধ্যে স্থাপিত ঈষদুচ্চ গাছের গুঁড়ির গায়ে একটা নাতিগভীর গহ্বর করিয়া দেওয়া হয়।

 পাঠক-পাঠিকাদিগকে বিশেষ করিয়া বলিতে চাহি যে, উপরে বর্ণিত নারিকেলমালা অথবা কাঠের বাক্সগুলি পক্ষীর নীড়ের আধারমাত্র,