পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৷৷৹

উহাদের বিচারশক্তি আছে কি না দেখিবার জন্য যে মানুষে নানা কৌশল করে, তাহা কে করিবে?

 পাখী খাঁচায় পুরিয়া মানুষ কত কৌশলে সঙ্কর জাতীয় নানা পক্ষী সৃষ্টি করিয়াছে, কত করিয়া কত পাখীর রঙ্ বদ্‌লাইয়া দিয়াছে, স্বভাব বদ্‌লাইয়া দিয়াছে। তাহাদের ভিতরকার বৃত্তি ও প্রবৃত্তিগুলি জাগাইয়া দিয়াছে, তাহার জীবনচরিত ও জীবনসমস্যা সম্বন্ধে কত গুহ্য কথা জানিতে পারিয়াছে। কতকাল ধরিয়া মানুষ পাখী পুষিতেছে। পাখীকে কত কাজে লাগাইতেছে। পাখী দিয়া পাখী ধরিতেছে। বেদের ঋষিরা শ্যেন পাখী পুষিতেন, শ্যেন পাখী দিয়া পাখী শীকার করিতেন; শ্যেন পাখীর আকারে বেদী তৈয়ার করিয়া তাহাতে শ্যেন-যাগ করিতেন। হাজার হাজার বৎসর আগে নানবেরা আহারান্তে পাখী পড়াইতেন ও পাখীর লড়াই দেখিতেন।

 প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগে সত্যবাবু সংক্ষেপে অনেক কথাই বলিয়াছেন; কিন্তু তাঁহার তৃতীয় ভাগটী বড়ই ভাল। এই ভাগে তিনি কালিদাসের বিহঙ্গতত্ত্ব ব্যাখ্যা করিয়াছেন। তিনি নিজেই বলিয়াছেন, কালিদাস সৌন্দর্য্যের কবি। যেখানে যাহা কিছু সুন্দর, তাহা কালিদাসের চক্ষু এড়াইতে পারে নাই। এ কথাটী সত্যবাবু যে এত অল্প বয়সে বুঝিতে পারিয়াছেন, ইহা বড়ই সুখের কথা। সৌন্দর্য্যের কবি যে শুধু সৌন্দর্য্যই বুঝিতেন, তাহা হইতেই পারে না। তিনি সুন্দর ও অসুন্দর দুই বুঝিতেন। অসুন্দর ছাড়িয়া দিতেন, বাছিয়া বাছিয়া সুন্দর সুন্দর জিনিসগুলিই আপনার কাজে লাগাইতেন। তাঁহার দৃষ্টিশক্তি (power of observation) অদ্ভূত ছিল। তিনি ঠিক জিনিসটী ঠিক বুঝিতে পারিতেন। যেটী ভাল সেইটী লইতেন, মন্দটী ত্যাগ করিতেন। জগতের কোথায় কি আছে, তাহা তিনি দেখিয়া শুনিয়া ও পড়িয়া জানিতেন। রঘুর দিগ্বিজয়ে কোন্ দেশের কোন্ জিনিসটী সুন্দর, তাহা তিনি দেখাইয়া গিয়াছেন। বাঙ্গালার