চতুর্থ অঙ্ক।
রাজা প্রস্থান করিলে পর, এক দিন অনসূয়া প্রিয়ংবদাকে কহিতে লাগিলেন সখি! শকুন্তলা গান্ধর্ব্ব বিবাহ দ্বারা আপন অনুরূপ পতি লাভ করিয়াছে বটে; কিন্তু আমার এই ভাবনা হইতেছে, পাছে রাজা নগরে গিয়া অন্তঃপুরবাসিদিগের সমাগমে শকুন্তলাকে ভুলিয়া যান। প্রিয়ংবদা কহিলেন সখি! সে সন্দেহ করিও না; তেমন আকৃতি কখন গুণশূন্য হয় না। কিন্তু আমার আর ভাবনা হইতেছে, না জানি, পিতা আসিয়া এই বৃত্তান্ত শুনিয়া কি বলেন। অনসূয়া কহিলেন সখি! আমার বোধ হইতেছে তিনি শুনিয়া রুষ্ট বা অসন্তুষ্ট হইবেন না; এ তাঁহার অনভিমত কর্ম্ম হয় নাই। কেন না, তিনি প্রথমাবধিই এই সঙ্কল্প করিয়া রাখিয়াছিলেন গুণবান্ পাত্রে কন্যা প্রদান করিব। যদি দৈবই তাহা সম্পন্ন করিল তাহা হইলে তিনি বিনা অনায়াসে কৃতকার্য্য হইলেন। সুতরাং ইহাতে তাঁহার রোষ বা অসন্তোষের বিষয় কি। উভয়ে এইরূপ কথোপকথন করিতে করিতে কুটিরের কিঞ্চিৎ দুরে পুষ্প চয়ন করিতে লাগিলেন।
এ দিকে শকুন্তলা অতিথি পরিচর্য্যার ভার গ্রহণ করিয়া একাকিনী কুটীরদ্বারে উপবিষ্টা আছেন। দৈবযোগে দুর্ব্বাসা ঋষি আসিয়া, তাঁহাকে উদ্দেশ করিয়া কহিলেন, আমি অতিথি। শকুন্তলা রাজার চিন্তায় একান্ত মগ্ন হইয়া এককালে বাহ্যজ্ঞানশূন্য হইয়াছিলেন সুতরাং দুর্ব্বসার কথা শুনতে পাইলেন না। দুর্ব্বাসা অবজ্ঞা দর্শনে রোষপরবশ হইয়া কহিলেন আঃ পাপীষ্বসি! তুই অতিথির অপমান করিলি। তুই যার চিন্তায় মগ্ন