য়াছি এবং অবিলম্বে দুই শিষ্য ও গোতমীকে সমভিব্যাহারে দিয়া, তোমাকে ভর্ত্তুসন্নিধানে পাঠাইয়া দিতেছি। অনন্তর তদীয় আদেশক্রমে শকুন্তলার প্রস্থানের উদ্যোগ হইতে লাগিল।
প্রস্থানসময় উপস্থিত হইল। গোতমী এবং শার্ঙ্গরব ও শারদ্বত নামে দুই শিষ্য শকুন্তলাসমভিব্যাহারে গমনের নিমিত্ত প্রস্তুত হইলেন। অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা যথাসম্ভব বেশ ভূষা সমাধান করিয়া দিলেন। মহর্ষি শোকাকুল হইয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, অদ্য শকুন্তলা যাইবে বলিয়া আমার মন উৎকণ্ঠিত হইতেছে, নয়ন অনবরত বাষ্পারিপরিপূর্ণ হইতেছে, কণ্ঠরোধ হইয়া বাক্শক্তি রহিত হইতেছি, জড়তায় নিতান্ত অভিভূত হইতেছি। কি আশ্চর্য! আমি বনবাসী, স্নেহবশতঃ আমারও ঈদৃশ বৈক্লব্য উপস্থিত হইতেছে, না জানি সংসারীরা এমন অবস্থায় কি দুঃসহ ক্লেশ ভোগ করিয়া থাকে। বুঝিলাম স্নেহ অতি বিষম বস্তু! পরে শোকাবেগ সংবরণ করিয়া, শকুন্তলাকে কহিলেন বৎসে! বেলা হইতেছে, প্রস্থান কৱ, আর অনর্থক কাল হরণ করিতেছ কেন? এই বলিয়া তপোবনতরুদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন হে সন্নিহিত তরুগণ! যিনি তোমাদিগের জলসেচন না করিয়া কদাচ জলপান করতেন না, যিনি ভুষণপ্রিয়া হইয়াও স্নেহবশতঃ কদাচ তোমাদের পল্লব ভঙ্গ কৱিতেন না, তোমাদের কুসুম প্রসবের সময় উপস্থিত হইলে যাঁহার আনন্দের সীমা থাকিত না, অদ্য সেই শকুন্তলা পতিগৃহ যাইতেছেন তোমরা সকলে অনুমোদন কর।
অনন্তর, সকলে গাত্রোখান করিলেন। শকুন্তলা, গুরুজনদিগকে প্রণাম করিয়া, প্রিয়ংবদার নিকটে গিয়া অপূর্ণ নয়নে কহিতে লাগিলেন সখি! আর্য্যপুত্রকে দেখিবার নিমিত্ত আমার চিত্ত অত্যন্ত ব্যগ্র হইয়াছে বটে; কিন্তু তপোবন পরিত্যাগ