সঞ্চার হইয়াছিল, ক্রমে ক্রমে সেই স্নেহ গাঢ়তর হইতে লাগিল। তখন তিনি মনে মনে কহিতে লাগিলেন কেন, এই অপরিচিত শিশুকে ক্রোড়ে করিবার নিমিত্ত, আমার মন এত উৎসুক হইতেছে! পরের পুত্র দেখিলে মনে এত স্নেহোদয় হয় আমি পূর্ব্বে জানিতাম না। আহা! যাহার এই পুত্র, সে ইহাকে ক্রোড়ে লইয়া যখন ইহার মুখ চুম্বন করে, হাস্য করিলে যখন ইহার মুখ মধ্যে অন্ধবিনির্গত দন্ত গুলি অবলোকন করে, যখন ইহার মৃদু মধুর আধ আধ কথা গুলি শ্রবণ করে, তখন সেই পুণ্যবান ব্যক্তি কি অনির্বচনীয় প্রীতি প্রাপ্ত হয়! আমি অতি হতভাগ্য! সংসারে আসিয়া এই পরম সুখে বঞ্চিত রহিলাম। পুত্রকে ক্লোড়ে লইয়া, তাহার মুখ চুম্বন করিয়া, সর্ব্ব শরীর শীতল করিব; পুত্রের অন্ধবিনির্গত দন্ত গুলি অবলোকন করিয়া, ময়নযুগলের সার্থকতা সম্পাদন করিব অথবা অন্ধোচ্চারিত মৃদু মধুর বচন পরম্পরা শ্রবণে শ্রবণেন্দ্রিয়ের চরিতার্থতা লাভ করিব। এ জন্মের মত আমার সে আশালতা নির্ম্মল হইয়া গিয়াছে।
ময়ুরের আনয়নে বিলম্ব দেখিয়া, কুপিত হইয়া বালক কহিল এখনও ময়ূর দিলে না; তবে আমি ইহাকে ছাড়িব না; এই বলিয়া সিংহশিশুকে অত্যন্ত বলপূর্বক আকর্ষণ করিতে লাগিল। তাপসী চেষ্টা পাইলেন; কিন্তু তাহার হস্ত হইতে সিংহশাবক ছাইতে পারিলেন না। তখন বিরক্ত হইয়া কহিলেন এমন সময়ে এখানে কোন ঋষিকুমার মাই যে ছাড়াইয়া দেয়। এই বলিয়া, পাশ্বে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিবামাত্র, রাজাকে দেখিতে পাইয়া কহিলেন মহাশয়! আপনি অমুগ্রহ করিয়া সিংহশিশুকে এই বালকের হস্ত হইতে মুক্ত করিয়া দেন। রাজা তৎক্ষণাৎ নিকটে আসিয়া, সেই বালককে ঋষিপুত্র বোধে সম্বোধন করিয়া, কহিলেন অধে ঋষিকুমার! তুমি কেন তপোবনের বিরুদ্ধ আচরণ