পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
শকুন্তলা

হউক, ইহার পিতার নাম জিজ্ঞাসা করি, তাহা হইলেই সন্দেহ ভঞ্জন হইবেক।

 এই বলিয়া তাপমীকে পুনর্ব্বার জিজ্ঞাসিলেন আপনি জানেন এই বালক পুরুবংশীয় কোন রাজার পুত্র? তখন তাপসী কহিলেন মহাশয়। কে সেই ধর্মপত্নীপরিত্যাগী পাপাত্মার নাম কার্ত্তন করিবেক। রাজা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন এই কথা আমাকেই লক্ষ্য করিতেছে। ভাল,ইহার জননীর নাম জিজ্ঞাসা করি তাহা হইলেই একুকালে সকল সন্দেহ দর হইবেক। অথবা পরস্ত্রী সংক্রান্ত কোন কথা জিজ্ঞাসা করা অবিধেয়। আর, আমি যখন মোহান্ধ হইয়া স্বহস্তে আশালতার মূলচ্ছে'দন করিয়াছি, তখন সে শালতাকে বৃথা পুনরুজ্জীবিত করিবার চেষ্টা পাইয়া, পরিশেষে কেবল সমধিক ক্ষোত পাইতে হইবেক। অতএব ও কথায় আর কাজ নাই।

 রাজা মনে মনে এই আন্দোলন করিতেছেন, এমন সময়ে অপরা তাপসী কুটীর হইতে মৃন্ময় ময়ুর আনয়ন করিলেন এবং কহিলেন বৎস! কেমন শকুন্তলাবণ্য দেখ। এই বাক্যে শকুস্থল। শব্দ শ্রবণ করিয়া, বালক কহিল কই আমার মা কোথায়? তখন তাপসী কহিলেন না বৎস! তোমার মা এখানে এসেন নাই। আমি তোমাকে পক্ষীর লাবণ্য দেখিতে কহিয়াছি। এই বলিয়া রাজাকে কহিলেন মহাশয়! এই বালক জন্মাবধি জননী ভিন্ন আপনার আর কাহাকেও দেখে নাই; নিয়ত জননীর নিকটেই থাকে; এই নিমিত্ত অত্যন্ত মাতৃবৎসল। শকুন্তলাবণ্য শব্দে জননীর নামাক্ষর শ্রবণ করিয়া উহার জননীকে মনে পড়িয়াছে। উহার জননীর নাম শকুন্তলা।

 সমুদায় শ্রবণ করিয়া, রাজা মনে মনে কহিতে লাগিলেন ইহার জননীর নাম শকুন্তলা। কি আশ্চর্য! উত্তরোত্তর সকল