এই বলিয়া উম্মলিত তরুর ন্যায় ভূতলে পতিত হইলেন। তদ্দর্শনে শকুন্তলা আস্তে ব্যন্তে রাজার হান্তে ধরিয়া কহিলেন আপুত্র! উঠ উঠ। তোমার দোষ কি; আমার অষ্টের দোষ। এত দিনের পর দুঃখিনীকে যে স্মরণ করিয়াছ তাহাতেই আমার সকল দুঃখ দুর হইয়াছে। এই বলিয়া শকুযুলার চক্ষে ধারা বহিতে লাগিল। রাজা গাত্রোত্থান করিয়া বাষ্পপূর্ণনয়নে কহিতে লাগিলেন প্রিয়ে! প্রত্যাখ্যান কালে তোমার নয়নযুগল হইতে যে জল। ধারা বিগলিত হইয়াছিল তাহা উপেক্ষা করিয়াছিলাম। পরে সেই দুঃখে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া গিয়াছিল। এক্ষণে তোমার চক্ষের জলধারা মুছিয়া | দিয়া সকল দুঃখ দূর করি। এই বলিয়া স্বহস্তে শকুন্তলার চক্ষের জল মুছিয়া দিলেন। শকুন্তলার লোকসাগর আরও উথলিয়া উঠিল; দ্বিগুণ প্রবাহে নয়নে বারিধারা বহিতে লাগিল।
অনন্তর, দুঃখাবেগ নিবারণ করিয়া, শকুন্তলা রাজাকে কহিলেন আপু! তুমি যে এই দুঃখিনীকে পুনর্ব্বার স্মরণ করিবে সে আশা ছিল না। কিরূপে আমি পুনরায় তোমার স্মৃতিপথে পতিত হইলাম ভাবিয়া স্থির করিতে পারিতেছি না। তখন রাজা কহিলেন প্রিয়ে! তৎকালে তুমি আমাকে যে অরীয় দেখাইতে পার নাই, কয়েক দিবস পরে উহা আমার হস্তে পড়িলে, আদ্যোপান্ত সমস্ত রাস্তু আমার স্মৃতিপথে অরূঢ় হয়। এই সেই অঙ্গীয়। এই বলিয়া, স্বীয় অঙ্গীস্থিত সেই অঙ্গখ্রীষ দেখাইয়া, পুনর্বার শকুন্তলার অলীতে পরাইয়া দিবার চেষ্টা করলেন। তখন শকুন্তলা কহিলেন আর্যপুত্র! আর আমার ও অঙ্গুরীয়ে কাজ নাই। ওই আমার সর্ব্বনাশ করিয়াহিল। ও তোমার অঙ্গীতেই থাকুক।
উভয়ের এইরূপ খোপকথন হইতেছে, ইত্যবসরে মাতলি