পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ পা ১ । সু ১ । ] সমাধি পাদ । ফল ইত্যাদি রূপে যোগ সম্বন্ধেই সমস্ত স্বত্র বুঝিতে হইবে। যোগবিষয়ে চিত্তের ভূমি অর্থাৎ অবস্থাবিশেষকে শাস্ত্রকারগণ মধুমতী, মধুপ্রতিকা, বিশোকা ও সংস্কারশেষা এই চারি ভাগে বিভক্ত করিয়াছেন, ইহাদের বিশেষ বিবরণ শেষে বলা যাইবে। এই সমস্ত ভূমিতে চিত্তের ধৰ্ম্ম অর্থাৎ বৃত্তি বিশেষ বা সমস্ত বৃত্তি নিরোধকে যোগ বলে। বুত্থান ও সমাধি সাধারণচিত্তবৃত্তি পাচ প্রকার, যথা, ক্ষিপ্ত, মূঢ়, বিক্ষিপ্ত, একাগ্র ও নিরুদ্ধ। সত্ব, রজঃ ও তমঃ এই গুণত্রয় চিত্তের উপাদান, সুতরাং উচ্চার ধৰ্ম্ম সকল চিত্ত্বে নির্কিত আছে। যে সময় রজোভাগের আধিক্যবশতঃ তদ্দ্বারা চিত্ত চালিত হইয়া তড়িৎ প্রবাহের ন্যায় বিষয় হইতে বিষয়ান্তবে গমন কবে তাহাকে ক্ষিপ্ত বলে । আলস্য তন্দ্রা মোহ প্রভৃতি বৃত্তিকে মূঢ় বলে। প্রায়শঃই চঞ্চল থাকিয়া কদাচিৎ স্তিরভাব অবলম্বন করাকে বিক্ষিপ্ত ভূমি বলে। এক বিষয়ে বৃত্তি (জ্ঞান ) ধারার নাম একাগ্র। সংস্কার মাত্র শেষ থাকিয়া সমুদায় বৃত্তি নিরোধের নাম নিরুদ্ধভূমি। একাগ্র ভূমিতে পৌব্বাপৰ্য্য রূপে মধুমতী, মধুপ্রতিকা ও বিশোকা এই তিনটী অবস্থা হইয়া থাকে। নিরুদ্ধ ভূমিকেই সংস্কাবশেষ বলে। এই ভূমি পঞ্চকের মধ্যে ক্ষিপ্ত ও মূঢ় ভূমিতে সমাধির সম্ভাবনা নাই ; বিক্ষিপ্তচিত্তে সময় সময় স্থিরতা হয় সুতরাং যোগের সম্ভাবনা, এরূপ আশঙ্কা হক্টতে পারে, তাই নিষেধ করা হইয়াছে। প্রাপ্তি থাকিলেই প্রতিষেধের আবশ্যকতা, ক্ষিপ্ত ও মূঢ় ভূমিতে সমাধির প্রাপ্তি নাই সুতরাং তাহাতে নিষেধও করা হয় নাই । বিক্ষিপ্ত অবস্থায় সমাধি হয় না বলায় কৈমুতিক ন্যায়ে অর্থাধীন ক্ষিপ্ত ও মূঢ় অবস্থায় সমাধি নিষেধ বুঝিতে হইবে। বিক্ষিপ্ত চিত্তে যদিচ কখন কখন সাত্বিক ভাব আবির্ভূত হইয়া স্থিরতা জন্মায় তথাপি উহা বিক্ষেপ কর্তৃক সম্পূর্ণ পরাহত, সুতরাং তাহার সত্তা পর্যন্ত সন্দেহস্থল, কার্য্য করা ত’ অতি দুবের কথা। চতুর্দ্দিকে প্রবল শক্র পরিবেষ্টিত হীনবল ব্যক্তির ন্যায়, সর্ব্বদা জায়মান রাজস বিক্ষেপের মধ্যনিবিষ্ট কদাচিৎ উদ্ভূত সাত্বিক বৃত্তি স্থিরতার সন্তা বা কার্য্যকারিত কিছুই সম্ভব নহে । পরিশেষে একাগ্রভূমিতে সম্প্রজ্ঞাত ও নিরুদ্ধভূমিতে অসম্প্রজ্ঞাত এই দ্বিবিধ যোগ হইয়া থাকে । “সম্প্রজ্ঞায়তে সাক্ষাৎ ক্রিয়তে ধ্যেয়স্বরূপমাত্র" অর্থাৎ যে অবস্থায় ধ্যোয়ের যথার্থরূপ প্রত্যক্ষ হয় তাহাকে সম্প্রজ্ঞাত যোগ বলে।