পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩০৮ . পাতঞ্জল দর্শন । [পা ৪। সু ১০ । ] স্থানে গমনরূপ সংসারেরও নিৰ্ব্বাহ হয়, (চিত্ত বিভূ অর্থাৎ সৰ্ব্বত্রস্থিত হইলে এরূপ ঘটিতে পারিত না, আকাশ প্রভৃতি বিভূপদার্থের গমনাগমন হয় না, ইহাই সাংখ্যের মত)। আচাৰ্য্য স্বয়ন্থ অথবা পতঞ্জলি বলেন চিত্ত বিভু অর্থাৎ পরম-মহৎ-পরিমাণ, উহার কেবল বৃত্তি ( চেতন ) সঙ্কোচ ৰিকাশশালী হয়, অর্থাৎ ক্ষুদ্র দেহে সঙ্কুচিত হয় বৃহৎ দেহে বৃহৎ হয়। এই বৃত্তি ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মরূপ নিমিত্ত (অদৃষ্ট) বশতঃই হইয়া থাকে। উক্ত নিমিত্ত হুই প্রকার, একটা বাহ অপরটা আধ্যাত্মিক, শরীর বাক্ প্রভৃতি দ্বারা যে স্তব, দান ও অভিবাদন ( নমস্কার ) প্রভৃতি হয় তাহাকে বাহ বলে, আদি শব্দে অধৰ্ম্মের কারণ পরদ্রব্য অপহরণ প্রভৃতি বুঝিতে হইবে। কেবল চিত্তদ্বারা যে শ্রদ্ধা প্রভৃতি সম্পন্ন হয় তাহাকে আধ্যাত্মিক বলে, এখানেও আদি-শব্দে পাপের কারণ অশ্রদ্ধা প্রভৃতি বুঝিতে হইবে। এ বিষয়ে আচাৰ্য্যগণ বলিয়াছেন, “ধ্যানশালী যোগিগণের মৈত্রীকরুণাদি বিহার (ব্যাপার) সকল বহিঃসাধনের অপেক্ষ না করিয়াই প্রকৃষ্ট ধৰ্ম্ম (শুক্লধৰ্ম্ম ) উৎপন্ন করে। বাহ ও আধ্যাত্মিক সাধনের মধ্যে আধ্যাত্মিক মানসই প্রধান, কেননা, জ্ঞান ও বৈরাগ্যরূপ মানসধৰ্ম্ম অপর কাহারও দ্বারা অভিভূত হয় না, বরং জ্ঞান ও বৈরাগ্য হইতে উৎপন্ন ধৰ্ম্মই অপর ধৰ্ম্মসকলকে অভিভব করে, ( বুঝাইবার নিমিত্ত প্রসিদ্ধ দুইটা উদাহরণ দেখান হইতেছে) চিত্তের বল ব্যতিরেকে শরীর ব্যাপার দ্বারা কোন ব্যক্তি দণ্ডকারণ্য শূন্ত করিতে পারে ? কেই বা অগস্ত্যের ন্তায় সমুদ্র পান করিতে সমর্থ হয় ॥ ১০ ॥ মন্তব্য। পূৰ্ব্ব স্বত্রে বলা হইয়াছে, পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব বাসনা (সংস্কার) সমুদায় মার্জারাদিজন্ম দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়, পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্বতর জন্ম থাকিলে উক্ত বিষয় যুক্তিযুক্ত হইতে পারে, পূৰ্ব্বজন্মে প্রমাণ কি ? আস্তিক বলিবেন জাতমাত্র বালক স্তম্ভপানে প্রবৃত্ত হয়, ভয়ের কারণ দেখিলে কম্পিত হয়, হর্ষের কারণে আনন্দিত হয়, ইহাতে বুঝিতে হইবে পূৰ্ব্ব-জন্ম আছে, সেই জন্মে স্তন্তপানাদির উপযোগিতা জানিয়াছে পুনৰ্ব্বার সেই গুলির স্মরণ হওয়ায় ওরূপ করি থাকে। এ বিষয়ে নাস্তিকের আপত্তি, তাহা কেন হুইবে ? aউহা স্বভাবতঃই হইয়া থাকে, দিবাভাগে পদ্ম বিকশিত হয়, রাত্রিতে মুদ্রিত হয়, ইহ যেমন স্বাভাবিক, বালকের মুখ স্নান ও মুখ প্রসন্নতাও ঐরূপ স্বাভাবিক।