৩২৮ পাতঞ্জল দর্শন। [পা ৪। সূ২১ । ] স্বকীয় ক্ষণিক মত হইতে ভয় পায়, কারণ একই চিত্ত যদি সাংসারিক পঞ্চস্কন্ধ পরিত্যাগ করিয়া অন্তবিধ স্কন্ধের অনুভব করে তবে ক্ষণিকবাদ থাকে না, স্থিরচিত্ত স্বীকার হইয় পড়ে। অপর শূন্তবাদিগণ উক্ত পঞ্চস্বন্ধের মহানিৰ্ব্বেদ নামক বৈরাগ্যের ও অনুৎপত্তিরূপ প্রশাস্তির নিমিত্ত জীবন্মুক্ত গুরুর নিকটে ব্ৰহ্মচর্য্যের অনুষ্ঠান করিব বলিয়া শূন্তবাদ স্বীকার পূর্বক উক্ত সত্বেরই (চিত্তেরই। সত্তার অপহব করে। সাংখ্যযোগ প্রভৃতি, প্রকৃষ্টবাদ সকল স্বশকে স্বামী পুরুষকেই চিত্তের ভোক্তারূপে স্বীকার করেন ॥ ২১ ॥ - মন্তব্য। একটী চিত্তের বিষয় আর একটী চিত্ত হইতে পারে না, কারণ সজাতীয় বস্তু সজাতীয়ের প্রকাশক হয় না, একটা প্রদীপ আর একটা প্রদীপের প্রকাশ করিতে পারে না, সুতরাং জ্ঞানের বিষয় জ্ঞান এ কথার কোন যুক্তি নাই। পুরুষ চিত্তের প্রকাশক হইতে পারে, কারণ, পুরুষ চিত্তের সজাতীয় নহে, পুরুষ স্বতঃপ্রকাশস্বভাব, চিত্ত জড় । হ্যায়বৈশেষিক মতে ব্যবসায় জ্ঞান (অয়ং ঘটঃ ইত্যাদি ) অনুব্যবসায় জ্ঞানের (ঘটমহং জানামি ইত্যাদির) বিষয় হয়, কিন্তু অনুব্যবসায়ের আর অল্পব্যবসায় স্বীকার নাই, এস্থলে বেদান্ত সাংখ্য প্রভৃতি স্বপ্রকাশবাদী বলিতে পারেন যদি উত্তর জ্ঞান অনুব্যবসায় স্বপ্রকাশ হইতে পারে তবে প্রথম জ্ঞান ব্যবসায়ের অপরাধ কি ? বেদান্ত সাংখ্য মতে অনন্ত অনুব্যবসায় স্থানে স্বপ্রকাশ চৈতন্ত । পুরুষ, সাক্ষী) স্বীকার করা হয়। জ্ঞানের বিষয় জ্ঞান হয় বলিলে অনবস্থা হয়, উত্তর জ্ঞানট স্বয়ং জ্ঞাত (প্রকাশিত) না হইয়া পূৰ্ব্ব জ্ঞানের প্রকাশক হইতে পারে না, “স্বয়মসিদ্ধঃ কথং পরা সাধয়তি,” সুতরাং বিষয়ের প্রকাশ অসম্ভব হওয়ায় জগতের অন্ধতার প্রসক্তি হয়, সমস্ত ব্যবহারের উচ্ছেদ হইয় উঠে। উক্ত অনবস্থা মূলের ক্ষতিকারক হয় সুতরাং অত্যন্ত দোষাবহ “সৈবানবস্থা দেবার যা মূলক্ষতিকারিণী, অতএব স্বপ্রকাশ অতিরিক্ত পুরুষের স্বীকার করাই শ্রেয়স্কর। বৌদ্ধগণের পঞ্চস্কন্ধ এইরূপ, “অহং অহং” এইরূপ আলয় বিজ্ঞান প্রবাহকে বিজ্ঞানস্কন্ধ (জীবাত্মা ) বলে, মুখাদির অমুভবের নাম বেদনাঙ্কন্ধ, সবিকল্প জ্ঞানকে (যাহাতে ৰিশেষ্য বিশেষণের প্রতীতি হয়) সংজ্ঞাস্কন্ধ বলে; শব্দাদি বিষয়ের সহিত ইঞ্জিয়গণকে রূপস্কন্ধ বলে এবং রাগ, দ্বেষ, মোহ, ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্ম
পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৩৪৫
অবয়ব