পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৩২ . পাতঞ্জল দর্শন । [ পা ৪ । সূ২৩। ] অতিরিক্ত বলিয়া স্বীকার করে না, তাহদের মতে গবাদি ঘটাদিরূপ চেতনাচেতন জগৎ সমস্তই জ্ঞানের পরিণাম । ঐ সমুদায় অবোধ লোকের প্রতি দয়া করা কর্তব্য, কারণ উহাদের ভ্রমের কারণ আছে, চিত্ত সকলরাপেই (পুরুষাকারেও ) ভাসমান হয়, তাই বুঝিতে না পারিয়া উহারা চিত্তকেই আত্মা বলে। আত্মবিষয়ে সমাধিপ্রজ্ঞাতে অবতারণা করিয়া ঐ সকল অবোধ লোককে বুঝাইতে হয়, উক্ত সমাধি স্থলে আত্মাই আলম্বন (বিষয় ) হয়, স্বতরাং সমাধিপ্রজ্ঞা (চিত্তের বৃত্তি) হইতে উহা পৃথকৃ, নিজেই নিজের বিষয় হইতে পারে না, চিত্তবৃত্তিতে পুরুষের প্রতিবিম্ব পড়ে, ঐ প্রতিবিম্বট সমাধির আলম্বন, ঐ প্রতিবিম্ব পদার্থ যদি চিত্তমাত্র হয়, তবে প্রজ্ঞা (বৃত্তি) দ্বারাই প্রজ্ঞার স্বরূপ কখনই গৃহীত হইতে পারে না, অতএব প্রজ্ঞাতে ( সমাধিবৃত্তিতে ) প্রতিবিম্ব পদার্থটা যাহা দ্বারা প্রকাশিত হয় সেই পুরুষ । এইরূপে গৃহীতৃ (আত্মা) গ্রহণ (ইস্ক্রিয়) ও গ্রাহ (বিষয়) স্বরূপ জ্ঞানভেদে এই তিনটাকেই স্বভাবতঃ পৃথকৃরূপে সম্যগদর্শী যোগিগণ বিভাগ করিয়া বুঝাইয়া দেন, উহারাই বিশেষরূপে পুরুষের স্বরূপ অবগত আছেন ॥ ২৩ ॥ মন্তব্য। একটা স্বচ্ছ স্ফটিকের এক দিকে জপাকুসুম ও অন্য দিকে নীলকান্তমণি স্থাপন করিলে যেমন ঐ স্ফটিক উভয়রপে ভাসমান হয়, স্ফটিকের স্বীয়রূপ থাকিয়াও তাহা প্রচ্ছন্ন থাকে, তদ্রুপ চিত্তদর্পণে এক দিকে গো ঘটাদি বিষয়ের ও অন্য দিকে পুরুষের ছায়া পতিত হয়, চিত্তের স্বরূপ তখন ঐ উভয়রপেই ভাসমান হয়, পুরুষের ছায়া গ্রহণ করিয়া চিত্তই পুরুষরূপে ভাসমান হয়, ইহাকে ভোক্তৃপুরুষ ( জীবাত্মা) বলা যায়। মুখদুঃখাদি সম্বলিত এই চিত্ত হইতে নিগুণপুরুষকে পৃথক্ করিয়া জানা বড়ই কঠিন ব্যাপার, তাই বৌদ্ধগণ চিত্তকেই আত্মা বলে। নৈয়ায়িকগণ অতিরিক্ত আত্মা স্বীকার করিয়াও প্রকারান্তরে ঐ সগুণ চিচ্ছায়াপন্ন চিত্তকেই জীবাত্মা বলিয়া নির্দেশ করেন, নিগুণস্ব প্রকাশ চৈতন্য পুরুষকে অনুভব করা যায় না, বিম্ব না থাকিলে প্রতিবিম্ব পড়ে না, তাই বিম্বস্থানীয় পুরুষ স্বীকার করিতে হয়, চিত্তবৃত্তিতে প্রতিবিম্বিত হইলে পুরুষের অনুভব হইয়া থাকে। ২৩। ভাৰ্য। কুর্তশ্চৈতৎ ?