পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পা ১ । সূ ১৬ ] সমাধি পাদ । , 85 অপর বৈরাগ্য বলা হইয়াছে বুঝিতে হইবে, অপর বৈরাগ্যই পর বৈরাগ্যের কারণ ) ইহার মধ্যে পর বৈরাণ্যটী জ্ঞান প্রসাদ অর্থাং চিত্তের নিৰ্ম্মলতার শেষ সীমা। এই পর বৈরাগ্য দ্বারা আত্মতত্বসাক্ষাৎকারী যোগিগণের এইরূপ জ্ঞান হইয়া থাকে, “পাইবার যোগ্য বস্তু (কৈবল্য) পাইয়াছি, ক্ষয়ের উপযুক্ত পঞ্চবিধ ক্লেশ (অবিদ্যা প্রভৃতি ) ক্ষীণ হইয়াছে, অবিচ্ছিন্ন সংসারপ্রবাহ ছিন্ন হইয়াছে, যে সংসারের বিচ্ছেদ না থাকায় প্রাণিগণ জন্মিয়া মরে এবং মরিয়া পুনৰ্ব্বার জন্মগ্রহণ করে”। জ্ঞানেরই চরম উন্নতি পর বৈরাগ্য, মুক্তি ইহারই অন্তর্গত ॥ ১৬ ॥ মন্তব্য। পর বৈরাগ্যটী জীবন্মুক্তিরই নামান্তর মাত্র। যদিচ বৈরাগ্য শব্দে রাগের অভাব বুঝায়, কিন্তু পতঞ্জলির মতে অভাবটী অতিরিক্ত পদার্থ নহে, অধিকরণ স্বরূপ, তাই বৈরাগ্যকে জ্ঞানপ্রসাদ বলা হইয়াছে, জ্ঞানের প্রসাদ অর্থাৎ রজঃ ও তমঃ গুণের সম্পূর্ণ তিরোধান। অপর বৈরাগ্য অবস্থায় রজঃ ভাগ কিছু পরিমাণে থাকে, পর বৈরাগ্যে তাহারও বিগম হয়, স্বতরাং প্রকাশ স্বভাব চিত্ত স্বকীয় স্বচ্ছভাবে প্রকাশ পায়। বহুকাল যাবৎ যোগের উপায় অনুষ্ঠান করিলে আত্ম সাক্ষাৎকার দ্বারা অবিদ্যা প্রভৃতি নষ্ট হয়, তখন একটা অনিৰ্ব্বচনীয় ভাব (সমবৃষ্টি ) উপস্থিত হয়, উহাকেই জীবন্মুক্তি বলে। জীবন্মুক্তি কি তাহা তাহারাই জানেন, বাক্য দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। যে বস্তু নিজের (আত্মার ) উপকারক তাহাতে রাগ ( আসক্তি ) ও যাহা অপকারক তাহাতে দ্বেষ হইয়া থাকে ইহাই স্বাভাবিক নিয়ম ৷ দেহাদিকে আত্মা বলিয়া জ্ঞান থাকাতেই উক্ত রাগ দ্বেষ হইয়া থাকে, আত্মা নিগুণ চৈতন্ত স্বরূপ এরূপ জ্ঞান দৃঢ় হইলে আর রাগ দ্বেষের সম্ভাবনা থাকে না। কারণ তাদৃশ আত্মার উপকার বা অপকার কিছুই সম্ভব নহে। এই ভাবে বস্তুবিবেকই প্রকৃত বৈরাগ্যের কারণ, বৈরাগ্য বলপূৰ্ব্বক সম্পাদিত হয় না, বিষয় দোষ, বস্তুবিচার, অধ্যাত্ম দৃষ্টি প্রভৃতি দ্বারা স্বভাবতঃই বিষয় বৈরাগ্য হইয়া থাকে ॥১৬ ॥ ভাষ্য। অর্থ উপায়দ্বয়েন নিরুদ্ধ-চিত্তবৃত্তেঃ কথমুচ্যতে সুম্প্রজ্ঞাতঃ সমাধিরিতি ?