পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুনীল বলে, এ লেখা কি কড়া হয়েছে ? ভূপেনবাবু, দেখুন তো পড়ে। আপনার মতটা শুনি । ভূপেন তাড়াতাড়ি স্লিপ ক’খানা পড়ে বলে, পয়েণ্ট মোটামুটি সব আছে, তবে ভাষাটা নরম হয়ে গেছে। সুনীল বলে, আমারও তাই মনে হচ্ছিল। আগে মোটে একটা দুটো কাগজ পড়তাম, বুঝতাম না। আজকাল অনেকগুলি কাগজে চোখ বুলিয়ে দেখছি।- ভাষার কায়দাটাই যেন আসল ব্যাপার। কি বলা হচ্ছে তার চেয়ে বলার ভঙ্গিটা দিয়েই যেন কাগজের পলিশি বজায় রাখার চেষ্টা হচ্ছে। আপনি ঠিক বলেছেন। নিখিলবাবুর এ লেখাটায় সব কথাই আছে-ভাষার জন্য আসল কথা ছোট হয়ে, ছোট কথা গুরুত্ব পেয়েছে। ভূপেন খুন্সী হয়ে হাসে। সুনীল বলে, আপনি একবার চেষ্টা করে দেখবেন, গরম করতে পারেন নাকি ? আমি খুব গরম লেখা চাইছি। আপনি যত পারেন। কড়া করে দিন, আমি দরকার মত ঘষে মেজে নেব । সুনীল চলে গেলে ভূপেন ও নিখিল মুখ চাওয়া চাওয়ি করে। শৈলেশ নতুন এসেছে, সে জিজ্ঞাসা করে, হাত বদল করে কি লেখা ভাল হয় ? খবরের কাগজে আবার ভাল লেখা ! রাত দশটায় ভূপেন লেখা নিয়ে সুনীলের ঘরে গেলে সুনীল তাকে বসতে বলে। একটা সিগারেট দেয় । ধীরে ধীরে তার লেখাটা পড়ে মুখ তুলে বলে, ভূপেনবাবু, নিখিলবাবুকে আমি বিদায় দিচ্ছি। ওঁকে দিয়ে আর দরকার নেই । ভূপেনের মুখ একটু পাংশু হয়ে যায়। সে আমতা আমতা করে বলে, কড়া লেখা অবশ্য ওনার ভাল আসে। al f済喜ー S