পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্বিকার হয়ে না থেকে একটু যদি রাগ করত দাদা, একটু যদি দেখাত যে ছোট বোন কথা না শোনায় তার মনে আঘাত লেগেছে । শাড়ীটা কিনে অপরাধ করেছে এই অনুভূতিটাই জোরালো হচ্ছিল কল্পনার । মা আর দাদার আলাপ শুনে তখনও যেটুকু আনন্দ অবশিষ্ট ছিল তাও উপে में कईनां । সুনীল আপিস থেকে ফিরলে মান মুখে কাছে গিয়ে বলে, দাদা, রাগ কোরো না, এবারের মত মাপ কর । সুনীল বলে, রাগ করব কেন ? নিজের চেষ্টায় নিজের সাধ মিটিয়েছিস, আমার রাগ করার কি আছে ? আমাকে জালাতন করলে রাগ করতাম। কল্পনা তার মুখের দিকে চেয়ে ভাবে, দাদার বুকটা কি পাথর দিয়ে গড়া ? সন্ধ্যার পর মায়াদের বাড়ীর স্কুলে সর্টহ্যাণ্ড ও টাইপরাইটিং শেখাতে গেলে মায়া বলে, কল্পনার কাছে শাড়ীর ব্যাপার শুনলাম। সত্যি, কি করে পারেন। আপনি ? না পেরে উপায় নেই তাই পারি। মায়া একটু সংশয়ভরে তাকায়। বলে, তিনটে টাকায় কি আসন্ত-যেত ? আপনি নাকি খুকুকে পুতুল পৰ্য্যন্ত কিনে দেন না । ছোট্ট বোনটিকে পুতুল দিলে ফতুর হবেন ? মায়া কখনো এ ভাবে তার সঙ্গে কথা বলে না, তার কাজের মানে বোঝার চেষ্টা করার বদলে এ যেন একেবারে সমালোচনা করে বসা ! সুনীল তাই একটু আশ্চৰ্য্য হয়ে যায়। মায়া সাধারণতঃ মোটামুটি বুঝতে পারে তার কাজের মানে । সুনীল বলে, অনেক দিন ধরে কল্পনা অনেক রকম আব্দার করেছিল। চাকরী পাওয়ার গোড়ার দিকে প্ৰত্যেক দিন অন্ততঃ দশটা আব্দার করত । আজকাল আর বড় একটা কেউ চায় না। আমার কাছে। খুকুকে পুতুল দিলে কি হত জানেন ? কল্পনাকে তের’র বদলে বোল টাকার কাপড় দিলে ? আবার সবাই V)