পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘমোন । আমি পালাই সকালে একেবারে বাজার করে নিয়ে বাড়ী ফিরে সুনীল খবর পায়, অনিল তখনও পৰ্য্যন্ত বাড়ী ফেরে নি। গৌরী আপশোষ করে বলে, কি সে মতিগতি হল ছেলেটার! কল্পনা বলে, আমার মনে হয় কোন বন্দ খেয়াল ধরেনি ছোড়দাকে, পয়সা রোজগারের চেষ্টা করছে। তোব একথা মনে হয় কেন ? মেসে বন্ধু পুষ্যতে পয়সা লাগে তো। আধঘণ্টা পরে অনিল ফিরে এলে তার চেহারা দেখে মনে হয় কল্পনার অনুমানই সত্য, বদখেয়ালে বাইরে রাত কাটাবার মত কোনরকম ছাপ তার মুখে নেই। বেশ তাজাই দেখাচ্ছে তাকে । কল্পনাই তাকে জিজ্ঞাসা করে, বাড়ীতে কিছু না জানিয়ে কোথায় রাত কাটানো হল বাবুর ? বন্ধুর বাড়ী ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কেন ? ঘুম কি আজকাল বেশী হচ্ছে ? বিয়ে হয়ে তোর মাতব্বরি তো বেশী হয়েছে ! ওটা মেয়েদের হয়ে থাকে। বেশ তো আমার মাতব্বরি পছন্দ না হয়, দাদার কাছে ব্যাপার ট্যাপার সব খুলে বলবে যাও। কলেজের ছাত্র যদি পড়াশোনা বাতিল করে দিনরাত আডা মেরে বেড়ায়, বাড়ীর লোকের একটু ভাবনায় পড়তে হয়। কিন্তু ছোড়দা । তোমার উচিত নিজে থেকে সব খুলে বলা । দাদা কিছু বলতে গেলে তো আবার অপমান হবে। অনিল চা খেতে খেতে গোমড়া মুখে ভাবে । কল্পনার কথাগুলি হেসে উড়িয়ে দেবার সাধ্য তার নেই। উচিত অনুচিতে একটা সহজ বাস্তব বিচার সুনীল যেন গায়ের জোরে তার অভ্যাস করিয়ে দিয়েছে। Y R. C.