পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুনীল একটু সামলে নিক । প্ৰাণটা ছটফট করে মায়ার। সুনীলকে জানিয়ে দিতে বড়ই সাধ জাগে যে তারা যাই ভাবুক আর যেমন হিসােবই করুক, জগৎসংসারে সকলে জেনে গিয়েছে যে তাদের ভালবাসা হয়েছে । তারা ধরে নিয়েছে যে ভালবাসা তাদের জন্য নয়, সংসারে ভালবাসা বলতে আর দশটা মেয়ে পুৰুষ যা বোঝে সেটা ধাতেই আসে না তাদের। অথচ সংসারের ওই দশজনেই জেনে গিয়েছে যে তাদের মধ্যেই জন্মেছে খাটি ভালবাসা, আসল ভালবাসা ! সেদিন সুনীল ওইভাবে বিয়ের প্রস্তাবটা না করলে মায়া হয় তো সব কাজ ফেলে ছুটে গিয়ে সুনীলকে কথাটা শুনিয়ে দিত। এক মূহুর্তের জন্য তার দ্বিধা বা সংকোচ জাগতি না । সেদিন বিয়ে করতে চেয়ে কি ফঁাদেই তাকে ফেলেছে সুনীল। এত বড় একটা গুরুতর কথা শোনাবার জন্য প্ৰাণটা ছটফট করে। তবু মায়া ছুটে যেতে পারে না। কিসে যেন তাকে আটকে রাখে ! মনে হয়, যতই সহজ আর অকপট হোক তাদের সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মত খোলাখুলিভাবেই তারা আলোচনা করতে পারুক নিজেদের বিয়ের সুবিধা অসুবিধার কথা-আত্মসন্মান বজায় রেখে যেচে গিয়ে সুনীলকে এ কথাটা সে শোনাতে is a সুনীলকে কোন কথা বলতে সঙ্কোচ বোধ করবে। এটা এতদিন অভাবনীয় ছিল, প্ৰথমে ব্যাপারটা ভারি বিস্ময়কর মনে হয়। তারপর ক্রমে ক্রমে সে টের পায়, এতে আশ্চৰ্য্য হবার কিছুই নেই, এটাই স্বাভাবিক এবং সঙ্গত। এবার মুখ খোলার পালা স্বনীলের। সুনীল মুখ না খুললে, আত্মসম্মান বজায় রেখে এবিষয়ে তার পক্ষে একটু ইঙ্গিত করাও সম্ভব নয়। সেটা হবে নিজেকে অপমান করা, ছোট করা। S8t