পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়া বলে, তা জানি। তুমি কি আর আমাকে রেয়াৎ করবে ! সুনীল বলে রেয়াৎ করতে পারি। একটা কাজ করবে ? कि कांख ? তােমার স্কুলের বিষয়ে সংক্ষেপে একটা আর্টিকল লিখে দাও-রবিবারের কাগজে ছাপাব। কি ভাবে স্কুলটা আরম্ভ হল, কি ধরণের ছেলেমেয়ে শর্টহাণ্ড, টাইপরাইটিং, শেখে-ইংরাজীতে লিখতে পারবে তো ? মায়া হেসে বলে, তা কলমটলম ভেঙ্গে চেষ্টা করলে পারব বৈকি। এমনি বিজ্ঞাপনের চেয়ে এই আটকেলটা ঢের বেশী এফেকটিভ বিজ্ঞাপন হবে। আর্টিকেলটার পারিশ্রমিক বাবদ তোমার স্কুলের বিজ্ঞাপন আমরা এক হস্তা বিনা পয়সায় ছেপে দেব। খুব ছোট বিজ্ঞাপন। কিন্তু, দু'ইঞ্চির বেশী নয়। মায়ার বাড়ী ফিরতে ইচ্ছা করে না । মানুষ ও জীবনের কি বিচিত্ৰ সমাবেশ ঘটে একটা খবরের কাগজের আপিসে ! সুনীলের সঙ্গে বেশীক্ষণ কথা হয় না। তার, কথা বলার সময়ও নেই সুনীলের । কিন্তু নানা শ্রেণীর নানা প্ৰকৃতির নানা অবস্থার মানুষেরা যে ভিড় করে আসছে সুনীলের কাছে, কেউ দাপটে কথা কইছে। কারো কথা বিনয়ে জড়িয়ে জড়িয়ে যাচ্ছে এবং সুনীল সকলকেই সামলে চলছে-জীবনের এক বিস্ময়কর নতুন নাটকের মত মনে হয় মায়ার কাছে ব্যাপারটা । রাত ন’টার সময় মায় উঠবে উঠবে ভাবছে অঘোর পর্য্যন্ত হাজির হয় কাগজটার আপিসে, সুনীলের সম্পাদনা পরিচালনার ছোটখাট আপিস ঘরে গিয়ে বসে। দেখেই টের পাওয়া যায়। মেজাজ বিগড়ে গিয়েছে অঘোরের। সুনীল তার আপিসের সাড়ে তিনশ টাকার চাকরী ছেড়েছে, তার কাছে আর্থিক সাহায্য পাবার আশা ছেড়েছে, নিজে তার সঙ্গে গিয়ে দেখা করার বদলে তাকে তার আপিসে আসতে বাধ্য করেছে। একি সোজা অপমান অঘোরের ? মুস্কিল এই যে, সময় সময় মান অপমানের হিসাব রাখলে তার চলে না। t