পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুনীল বলে, খালি ঘরে বসতে বলিনি, তাই অপমান হয়েছে। মেয়েটার কি বুদ্ধি ! এত রাতে ফাক ঘরে গল্প করতে গিয়েছে। মা বলে, তাতে কি হয়েছে ? সন্ধ্যে রাত, আশপাশে আমরা এতগুলি লোক রয়েছি, দুদণ্ড কথা বলতে গেলে কি হয় ? ও সে রকম মেয়ে নয়, ওটুকু বুদ্ধিবিবেচনা আছে। ভদ্রলোকের মেয়ে কথা কইতে ঘরে গেছে বলে অপমান করে তাড়িয়ে দিলি । * মারা ভৎসনাতেও বড় ঝােঝ ফোটে আজ ! অনেক রাত্রি পর্যন্ত সেদিন ঘুম আসে না। মেয়েদের সম্পর্কে সত্যই কি তার বিকারের আতঙ্ক আছে ? এই দুর্বোধ্য আতঙ্কের চাপটা বেড়ে গিয়ে তাকে সাধারণ ভদ্রতা পৰ্য্যন্ত ভুলিয়ে দেয় ? কোন সঙ্গত যুক্তি সত্যই খাড়া করা যায় না রেবাকে অপমান করার স্বপক্ষে । স্বেচ্ছায় বিচার-বিবেচনা করে যদি সে এটা করত, নারীকে নরকের দ্বার ভেবে করত, তাহলেও একটা মানে থাকত। তার কাজের। এমন কিছু রেবা সত্যই করেনি। যাতে তার রাগ বা বিতৃষ্ণা জাগা উচিত ছিল। তার গায়ে ঢলেও পড়েনি, তার সঙ্গে ছ্যাবলামিও জুড়ে দেয়নি। আর পাঁচজনের সঙ্গে যে ভাবে মেলামেশা করে, তার সেকেলে মা পৰ্য্যন্ত আজকাল যে রকম মেলামেশায় কোন দোষ খুঁজে পান না, তার সঙ্গেও সেই ভাবেই মিলতে মিশতে চেয়েছে। রেবা, ভদ্রভাবে স্বাভাবিক ভাবে । এতই খারাপ লাগল সেটা তার যে ওকে অভদ্রের মত, অসভ্যোিব মত অপমান না করে পারল না ? এ তো তারই অসংযম ! পাগল না হোক, সে নিশ্চয় ভয়ানক ভাবে বিকারগ্রন্ত । সে নিশ্চয় কঠিন মানসিক রোগে ভুগছে। জীবন সম্পর্কে তার সব ধারণা ভুল। হিসাবনিকাশ ভুল। লোকে ঠিক কথাই বলে, সকলের হৃদয় আছে, শুধু তার হৃদয় নেই, সে অস্বাভাবিক। অত্যন্ত ভীরু ক্ষীণ একটা আওয়াজ যেন কানে আসে। প্রথমটা ধরতেই Σ Σ