পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এমনিই টাকা দিতে চাইছিলে, কিন্তু এমনি তো টাকা নিতে পারি না। বিহেলে তোমার টাকায় আমার অধিকার জন্মাবে। ক্ষণে ক্ষণে কতরকম ভাব যে খেলে যায় বিভােগর মুখে । একবার বোধহয় লজ্জাতেই লাল হয়ে যায় সমস্ত মুখখানা। যা ছিল তার কল্পনাতীত অভাবনীয় ব্যাপার তাই আজ এমন আচমকা বাস্তব সত্যের বাস্তব সম্ভাবনার রূপ নিয়ে সামনে হাজির হয়ে বিচলিতু অভিভূত করে দিয়েছে তাকে । হঠাৎ সে বলে, কিন্তু খোড়া বেী বলে তোমার খারাপ লাগবে না ? সুনীল বলে, না। অন্য মেয়ে হলে হয় তো লাগত, তুমি বলে লাগবে না। তোমায় খোড়া দেখে দেখেই আমার অভ্যাস হয়ে গেছে । আমি সমস্ত দিক তলিয়ে ভেবে দেখেছি। খারাপ লাগার সম্ভাবনা থাকলে আমি তোমায় বিয়ের কথা বলতাম না। কারণ তোমায় আমার খারাপ লাগা মানেই দাড়াবে তোমাকে অসুখী করা। আমার দিক থেকে ওসব কোন খুতখুতানি নেই। খোড়া মেয়ে হয়েও টাকার দামে নিজেকে বিক্ৰী কর নি-তোমার বাবা টাকা দিয়ে রাজপুত্ৰ কিনে আনলেও আসলে কিন্তু তোমার নিজেকেই বিক্ৰী করা হত। তুমি এভাবে ধর নি, সোজাসুজি হিসেব করেছ-টাকার জন্য যে তোমায় চাই<ে। সে অমানুষ। নিজেকে বিক্ৰী কর নি বলেই কিন্তু আমি তোমাঞ্চে শ্রদ্ধা করি । ! তুমি দেখছি আকাশ থেকে পড়লে! শ্ৰদ্ধা বুঝি শুধু পুরুষের পাওনা ? সুনীল হঠাৎ সুর পালটে বলে, যাকগে, বেশী বলে তোমার মাথা গুলিয়ে দেব না। এখন তুমি নিজের মন বুঝে ঘাখো। তোমাকে আমার খারাপ লাগবে না। এটা সত্যি কথা, তোমার জন্য স্নেহও আছে কিন্তু বিয়ে আমি তোমাকে করছি টাকার জন্য। এটা অস্বীকার করব না। টাকার দরকার না পড়লে কথাটা হয় তো আমার মনেও আসত না । বিভা মুখ নীচু করে। >bア?