পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাকে আদর করে বলে, কি জানো, আমার হৃদয় ভাবলে হৃদয়টা ছোট হয়ে খায়, হাল্কা হয়ে যায়। দশজনের হৃদয়ের সঙ্গে কারবার করার জন্য হৃদয়এরকম ভাবলেই হৃদয়টা ছোট না বড় সে চিন্তা চুকে যায়, অনেক মিথ্যা যন্ত্রণা থেকে হৃদয় বেচার রেহাই পায় ! খবর শুনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় আত্মীয় বন্ধু। অঘোরের খোড়া মেয়েটাকে শেষ পৰ্যন্ত বিয়ে করবে সুনীল! টাকার লোভের কাছে শেষ পৰ্য্যন্ত সুনীলের মত শক্ত আদর্শবাদী মানুষকেও মাথা নত করতে হয় । এ যেন বিশ্বাস হতে চায় না । খবর শুনে প্ৰথমে ফ্যাকাসে হয়ে যায় মায়ার মুখ, তারপর সে মুখে ঘটে অসহ্যু ক্রোধের কালো মেঘের সঞ্চার । অপমানে লজ্জায় ঘূণায় তার যেন মরে যেতে ইচ্ছা হয় । নিজেকে সে বারংবার ধিক্কার দেয় ! তাকে নরম পেয়েছে ভালমানুষ পেয়েছে বলেই না তার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করার সাহস হয়। সুনীলের। এতখানি তুচ্ছ সে সুনীলের কাছে ? সব ব্যাপারে। তবে তার পরামর্শ দরকার হয় কেন ? সুনীলের সঙ্গে তার তখন সামনাসামনি দেখা হলে বিশ্ৰী একটা কাণ্ড হয়ে যেত সন্দেহ নেই । মায়া তাই ঘটনাচক্ৰকে ধন্যবাদ দেয় যে রাত জেগে কাজ করতে হওয়ায় বাড়ী ফিরে সকালবেলা সুনীল ঘুমিয়ে পড়েছিল। সুনীলের ঘুম ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে মন শান্ত হয়ে যায় মায়ার। না, এতে তার কোন অপমান নেই। তাকে কোন কথাই তো দেয় নি। সুনীল । কথা দেওয়ার মত কোন কথাই তো তার সঙ্গে হয় নি। সুনীলের। তার নারীত্বের বদলে তার বন্ধুত্বকে বড় করে সমানভাবে তার সঙ্গে ধাস্তব সুখ সুবিধার দিকটা খোলাখুলি আলোচনা So