পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিয়ে আমার ব্যর্থ হয়ে গেল-বিভাকে সুখী করার সাধ্য আমার হবে না । ধতিই সংকল্প করি আর প্রতিজ্ঞা করি যে ওকে সুখী করবই-আমি নিজে অসুখী হলে শেষ পৰ্য্যন্ত বেচারাকে চোখের জলে ভাসতে হবেই। আমি নিজে সুখী না হলে আরেকজনকে সুখী করার দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতাও আমার থাকবে না। মায়া বলে, এবার বুঝেছি। সাধে কি এত বড় হৃদয় থাকতেও লোকে তোমায় হৃদয়হীন ভাবে ? সুখ দুঃখের হিসাব নিকাশটা পৰ্য্যন্ত তুমি অঙ্ক কষার হিসাবে দাড় করিয়েছ । অঙ্কশাস্ত্ৰ বিজ্ঞান। বিজ্ঞান ভুল করে না। বেশ তো । আমি বোকাহাবা মেয়েমানুষ, আমার একটা কথার সোজাসুজি জবাব দাও। হিসাব কষে দেখলে তুমি সুখী হবে ? বিভাকে নিয়ে সুখী হব। কিনা জানি না । দেখলাম, ওটা হিসাব করে বার করা যায় না-অন্ততঃ আমার সে ক্ষমতা নেই। কারণ ওইরকম সুখী হওয়াটা ঠিক কি ব্যাপার আমার কোন ধারণাই নেই। তবে এটা জেনেছি যে অসুখী হব না। তা ছাড়া অন্য দিকে সত্যই সুখ পাব-কাগজটা দাঁড় করাবার জন্য লড়াই করার সুখ । আরেকটা বিষয়ে আমি নিশ্চিন্ত আছি-বিভাকে অসুখী করব না । নহলে ও-বেচারাকে সুখী করার দায়িত্ব নিতে পারতাম ? মায়া একগাল হেসে বলে, তার মানেই তুমি বরাবর ওই মেয়েটাকে ভালবেসে এসেছে । সুনীলও হাসে । মুস্কিল হল কি জানো ? ভালবাসা কাকে বলে আমি জানি না। আমার এই মনোভাবটা, এই বিচার বিবেচনা হিসাব নিকাশটা তোমার মতে যদি ভালবাসা হয়, আমার কিছুই বলার থাকবে না। কিন্তু একটা কথা ভুলে যেও না । কাগজের জন্য টাকার দরকার না হলে ওকে বিয়ে করার কথা আমার মনেও আসত না । ভালবাসা কি এরকম বাস্তব প্রয়োজন দাড়াবার পর জন্মায় ? s সুখী না হতে পারি, আমার যদি মনে হয় জীবনটা এদিক SD)