পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অথচ পাঁচমিনিট পরে কল্পনাই নিয়ম খাটায় নিজের তের মাসের ছোট বােন|| আল্পনার উপর । লাঠি ধরে খুড়িয়ে খুড়িয়ে গিয়ে বিভাগাড়ীতে ওঠে। সুনীল রান্না ঘরে গিয়ে| তার ফেলে যাওয়া আটার পাতে বসে । রাত বেজেছে এগারোটা । আল্পনা চট করে পরণের শাড়ীটাই একটু ঘুরিয়ে পরে মুখে একটু পাউড়ার দিয়ে একগ্লাস জল খেয়ে স্যাণ্ডেলটা পায়ে ঢুকিয়ে বাইরে যাচ্ছিল, কল্পনা তার| হাত চেপে ধরে হুকুমের সুরে বলে, না । কেন মিছে গোলমাল করবি দিদি ? আমি যাবই। কেউ আমাকে ঠেকাতে পারবে না । কল্পনা প্ৰাণপণ শক্তিতে শক্ত করে তার হাত চেপে ধরে রেখে বলে, তোকে ঠেকাচ্ছি না তো ? তোর ইচ্ছে হলে তুই যাবি বৈকি। যেখানে খুন্সী যাবি এতরাত্রে হঠাৎ এভাবে গেলে নবীন। চটে যাবে, ওর বাপ মা সুবিধে পেয়ে যাতা| বলে নবীনের মন ভেঙ্গে দেবে। কাল সকালে ঠাণ্ডা মাথায় যাস। রাত কাটতে । মোটে কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার । আল্পনা কয়েক মূহুর্ত স্তব্ধ হয়ে থেকে বলে, হাতে লাগছে দিদি । তোর হাতে তো ভীষণ জোর ! কল্পনা তার হাত ছেড়ে দিয়ে বলে, বাঃ, মায়ের পেটের কোনটি যাবে মরুতে, হাতে জোর হবে না ? হাতটা আমার কেলিয়ে গেছে আল্পনা। টন টন। করছে । ছাই করছে। দাদার মত চলতে ফিরতে কথা কইতে শিখেছি তুমি। কল্পনা মিষ্টি সুরে বলে, কত খেটে দাদা আমাদের খাওয়াচ্ছে পরাচ্ছে বলত ? নতুন টাউসনী নিয়েছে আমাদের খরচ চালাতে না পেরে। দাদা অবশ্য একটু পাগলাটে কিন্তু সারাদিন খেটে যা পায় সব আমাদের পেছনে ঢালে তো ? দাদা বিয়ে করলে কি হাত ভাব দিকি ! tR