পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্দার প্রকৃতি হাল্কা নয়, তার ছেলেমি ন্যাকামি আসে না। কিন্তু জানাচেন হলেই মানুষের সঙ্গে কম বেশী হৃদয়গত সম্পর্ক গড়ে উঠবে, এতেই সে eg ། সেটা যে প্ৰেমাত্মক সম্পর্কই হবে এমন কোন কথা নেই । বাপ ভাই আত্মীর অনাত্মীয শত্রু মিত্রের সঙ্গে হৃদয়গ্নত একটা আকর্ষণ বিকর্ষণের সম্পর্ক থাকে না মানুষের ? সুনীল যেন ওরকম কোন সম্পর্কই গড়ে উঠতে দিতে নারাজ। নন্দ ফ্রয়েডের নামটাই শুনেছে । আর শুনেছে যে, ওই ভদ্রলোকের থিয়োরী অনুসারে মানুষের হৃদয় মন নাকি কামময-ক্ষেত মাষ প্ৰেম ভালবাসা থেকে বিরাগ বিতৃষ্ণ নিষ্ঠুরতা হিষ্টিরিযা সব কিছুর পিছনে ওই কামেব শক্তি । কে জানে এসব থিয়োরির কি মানে। একটু মাথা ঘামাবার তাগিদও সে বোধ করে না। যদিও তাব বন্ধু লীলা কয়েকবছর ধরে ফ্রয়েডকে নিয়ে মেতে আছে এবং তার ধারণা জন্মে গেছে যে মানুষের সব কাজ আর আকাজের মানে সে বুঝে গিয়েছে। বিদ্যাটা প্রয়োগ পরে তাঁর চলাফেরা ওঠা বসার ফ্রয়েডীয় বাখ্যা তাকে বুঝিয়ে না দিতে পারলে যেন লীলার শান্তি নেহী । লীলা এক ধরণের বিকারগ্রস্ত মানুষের কথা বলে, মেয়ে হলে পুরুষ আর পুরুষ হলে মেয়েদের সম্পর্কে হৃদয়টা ভোতা করে রাখাই নাকি তাদের বিকারের প্রধান কথা । সুনীল কি ওইরকম বিকৃত মানুষ ? কিন্তু একটা বিকারগ্ৰস্ত মানুষ এরকম ধীর স্থির সংযমী বিবেচক হয় কি করে, এত কাজ আর দায়িত্ব পালন করে কি করে ? জীবনের নীতিতে এমন কঠোর নিষ্ঠা, অন্য মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতা সম্পর্কে এমন উদারতা, এত দায় ও হাঙ্গামা সত্ত্বেও দুঃখ দুঃশ্চিন্তা বিষন্নতার ধার না। ধারা কি করে न न ? অথচ চাকরীও করে কালোবাজারী অঘোরের আপিসে । R