পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়া আশ্চৰ্য্য হয়ে বলে, তবে কি করে জানলেন ? সুনীলের মুখের ভাব এতটুকু বদলায় না, শান্তভাবে বলে, আপনার বোনকে সিনেমা দেখাতে, হাত খরচের টাকার জন্য ভাইটি আমার সাথে ঝগড়া করেছিল। তারপর কাটা টাকার জন্য সব সময় খ খ করছে। আংটি কলেজের বই হাত ঘড়ি সব বিক্রী করে দিয়েছে শুনলাম। কদিন থেকে দেখছি ভাইটি পাগলের মত করছে। ব্যাপারটা অনুমান করা কি কঠিন এ অবস্থায় ? মায়া রুষ্টস্বরে বলে, আমার বোনের জন্য আপনার ভাই পাগল হলে তো কথাই ছিল না-সাদাসিধে ব্যাপার হত। আপনার কাছে ছুটে না এসে আমি সংসারের হিসেবপত্র দেখতে বসে যেতাম । সুনীল সোজা হয়ে বসে বলে, বটে ? শুনিতো ব্যাপারটা। তবে ? মায়া বলে শুনে আপনি অবশ্য এতটুকু বিচলিত হবেন না। বলতে আমার কান্না পাচ্ছে। ছায়া কদিন ধরে ছটফট করছিল। আমি টের পেয়েও কিছু জিজ্ঞেস করি নি-জানি তো, আমাকে দিয়ে জিজ্ঞেস করাবার জন্যই ছটফট করছে। জিজ্ঞেস করলেই পেয়ে বসবে। আমি এমনভাব দেখাচ্ছিলাম যেন কিছুই আমার চোখে পড়েনি। আজ মেয়ে নিজে থেকে আমায় সব বললেন । একটু থেমে মায়া আবার সুরু করে, গোড়ার দিকে অনিল ছায়াকে সিনেমায় নিয়ে গিয়েছিল। কয়েকবার-এদিক ওদিক হৈ চৈ করেও বেড়িয়েছে। একদিন পয়সা ছিল না, ছায়া হাতের চুড়ি পৰ্য্যন্ত খুলে দিয়েছে। কিন্তু পরে ছায়াকে ছেড়ে অনিল নাকি রেবাকে ধরেছে। ছায়ার বদলে রেবাকে নিয়ে সিনেমায় যায়, এখানে ওখানে যায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোকে ছাড়ল কেন অনিল ? ও অনেক ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে যে কারণ বলল তার সোজা মানে দাঁড়ায় এই--আনিলের কাছে সব সময় পয়সা থাকে না, উনি তাই আরেকজনের সঙ্গে সিনেমায় গিয়েছিলেন। সেনদের ললিতের সঙ্গে । সেজন্য রাগ করে পাল্লা দিয়ে অনিল রেবাকে নিয়ে যায়-ছায়ার সঙ্গে কথা a कथं न ?