পাষাণের কথা
হূণগণ যখন গুপ্তসাম্রাজ্যের পশ্চিমপ্রান্ত আক্রমণ করিল, তখন কুমারগুপ্ত পাটলিপুত্রের প্রাসাদে সুষুপ্তিমগ্ন; কুমার স্কন্দগুপ্ত মথুরার শাসনকর্ত্তা। স্কন্দগুপ্ত সিন্ধুতীরে যথাসাধ্য হূণগণের গতিরোধ করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন; চন্দ্রগুপ্তের সুশিক্ষিত সৈন্যবৃন্দও যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছিল। ইরাবতী, বিতস্তা ও শতদ্রুতীরে উত্তরাপখবাসী সহস্র সহস্র সৈনিক স্বদেশরক্ষার্থ জীবন উৎসর্গ করিয়াছিল, কিন্তু বাত্যাতাড়িত সাগরোর্ম্মিরাশির ন্যায় হূণ অশ্বারোহিগণ স্কন্দগুপ্তের সৈন্যবল ভাসাইয়া লইয়া গেল। শতদ্রুপারে আসিয়া কুমার বিশ্রাম করিবার অবকাশ পাইলেন। বিতস্তাতীর হইতে ষে দূত সাহায্য প্রার্থনার জন্য মগধে গিয়াছিল, সে ফিরিয়া আসিয়া শতদ্রুতীরের স্কন্ধাবারে যুবরাজকে বিষমসংবাদ জ্ঞাপন করিল,—বৃদ্ধ কুমারগুপ্ত তরুণীর রূপজমোহে আবদ্ধ হইয়াছেন, পঞ্চাশৎবর্ষীয় বৃদ্ধ চতুর্দশবর্ষীয়া বালিকার পাণিগ্রহণ করিয়া উন্মত্ত হইয়াছেন, এবং স্কন্দগুপ্তের মাতা ক্রোধে ও ক্ষোভে উদ্বন্ধনে প্রাণত্যাগ করিয়াছেন। দারুণ সংবাদ শুনিয়া স্কন্দগুপ্ত স্তম্ভিত হইলেন, অসম দ্বন্দ্বে তাঁহার বিলক্ষণ বলক্ষয় হইয়াছিল। তিনি মগধ হইতে বহু সৈন্যের আশা করিয়াছিলেন; কিন্তু দূত আসিয়া সংবাদ দিল যে, সম্রাট্ তখন নূতন মহিষীর আবাসে; মাসাধিক কাল কেহ তাঁহার দর্শন পায় নাই। হতাশ হইয়া স্কন্দগুপ্ত মথুরায় প্রত্যাবর্ত্তন করিলেন ও তথার তদীয় খুল্লতাত মহারাজ-পুত্র গোবিন্দগুপ্তের প্রেরিত দূতমুখে সংবাদ পাইলেন যে, গোবিন্দগুপ্ত স্বয়ং বলসংগ্রহ করিতেছেন; তিনি সম্রাটের আদেশের জন্য অপেক্ষা করেন নাই; কারণ, তখনও পর্য্যন্ত কেহই সম্রাটের সাক্ষাংলাভে সমর্থ হয় নাই। সুখের বিষয় শতদ্রুতীর হইতে হূণগণ
৯৪