পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

কক্ষমধ্যে মুমূর্ষু গোবিন্দগুপ্ত সম্রাটকে শেষ উপদেশ প্রদান করিতেছেন। শ্রবণ কর, কক্ষমধ্যে গুরু গম্ভীর স্বর এখনও ধ্বনিত হইতেছে “স্কন্দ, সমুদ্রগুপ্তের গরুড়ধ্বজের সম্মান রক্ষা করিও, দেখিও তোরমাণের বংশজাত কেহ যেন কখনও পাটলিপুত্রের সিংহাসনে না আরোহণ করে। দেবতা ও ব্রাহ্মণ, রমণী ও শিশুকে সর্ব্বদা রক্ষা করিও। আর দেখিও, স্কন্দ, যদি পার, যাহার জন্য সমুদ্রগুপ্তের বিশাল সাম্রাজ্য ধ্বংস হইল তাহার যথোচিত শাস্তিবিধান করিও। বিমাতা বলিয়া ভীত হইও না। সে তোমার পিতার পরিণীতা পত্নী নহে। চাহিয়া দেখ, মগধ, তীরভূক্তি, কাশী ও কোশলের প্রজাসমূহ রাজস্ব দিতে অস্বীকার করিয়াছে। তাহারা বলে, রাজা শস্যরক্ষা করিলে ষষ্ঠভাগ পাইবেন, নতুবা নহে। সমুদ্রগুপ্তের বিখ্যাত নীতি অনুসারে গুপ্তবংশের জ্যেষ্ঠপুত্ত্র সিংহাসনের অধিকারী; সাম্রাজ্য স্কন্দগুপ্তের পুরগুপ্তের নহে। চাহিয়া দেখ, উদ্দণ্ডপুরদুর্গে মহাদেবী ও পুরগুপ্ত আবদ্ধ রহিয়াছেন। বিশ্বাসঘাতক তোরমাণ পুনরায় গোপাদ্রি আক্রমণ করিয়াছে, দূতপ্রেরণ না করিয়া সন্ধিভঙ্গ করিয়াছে, পুনরায় হূণযুদ্ধ আরদ্ধ হইয়াছে। দ্বিতীয় হূণযুদ্ধে মৈত্রকসেনাপতি ভট্টারক কেন রাজপদে বৃত হইয়াছিলেন, স্কন্দগুপ্ত কেন স্বহস্তে সমুদ্রগুপ্তের মুকুট লইয়া ভট্টারকের শিরে স্থাপিত করিয়াছিলেন তাহার ইতিহাস এখনও লুপ্ত হয় নাই। স্তূপধ্বংসের সহিত আমাদিগের মনুষ্যদর্শনের আশা দূর হইয়াছে, বহির্জগতের সংবাদ পাইবার আশাও দূর হইয়াছে।


১১১