মধ্য হইতে প্রাচীন স্তূপের সংস্কার করিবেন। সহস্র বৎসর আমি সেই ভরসায় দণ্ডায়মান ছিলাম। আমি দেখিতাম, ধ্বংসাবশেষের মধ্য হইতে নূতন স্তূপ উত্থিত হইয়াছে, পুরাতন সংস্কৃত হইয়াছে, জীর্ণ পাযাণের পরিবর্ত্তে নূতন পাষাণ আনীত হইয়াছে, পত্রপুষ্পমাল্যচন্দনে স্তূপ আবার সুশোভিত হইয়াছে। সূর্য্যাস্ত হইতে সূর্য্যোদয় পর্য্যন্ত দেখিতাম, সায়ংকালীন স্নান ও প্রসাধন সম্পন্ন করিয়া প্রজ্বলিত মধুজবর্ত্তিকা হস্তে নাগরিক ও নাগরিকাগণ তোরণপথে বেষ্টনীর মধ্যে প্রবেশ করিতেছেন, দলে দলে ভিক্ষুগণ স্তূপ প্রদক্ষিণ করিয়া তথাগতের পূজা করিতেছেন, সশব্দে গর্ভগৃহের পাষাণময় দ্বার উদ্ঘাটিত হইতেছে, শিলানির্ম্মিত আধারে রক্ষিত তথাগতের শরীর দীপালোকে অর্চ্চিত হইতেছে, গন্ধে ও পুষ্পে গর্ভগৃহের পথ আচ্ছন্ন হইয়া রহিয়াছে। ঊষাকালে পক্ষিগণের শব্দে সে সমস্ত চিন্তা দূর হইয়া যাইত, অল্পক্ষণ পরেই নিষ্ঠুর আলোক আসিয়া আমাদিগের বর্ত্তমান অবস্থার কথা স্মরণ করাইয়া দিত; দেখিতাম, স্তূপের পরিবর্ত্তে শিশিরসিক্ত তৃণদল বন্ধুর মৃৎপিণ্ডকে আচ্ছন্ন করিয়া রহিয়াছে। কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে মাংসবিহীন নরদেহপঞ্জরের দ্যায় কয়েকখণ্ড পাষাণ মস্তক উত্থিত করিয়া আছে।
মনে হইল, দূরে কে যেন বহুকষ্টে পাদচারণা করিতেছে, তাহার চরণদ্বয় আর যেন তাহাকে বহন করিতে অক্ষম;—দেহভারক্লিষ্ট হইয়া সে ব্যক্তি পুনঃ পুনঃ বিশ্রাম করিতেছে, ও পরক্ষণেই আবার যেন কোন আশায় অনুপ্রাণিত হইয়া পথ অতিক্রম করিবার চেষ্টা করিতেছে। সে নিকটে আসিলে দেখিলাম জীর্ণবাস পরিহিত দশনহীন, শুক্ল কেশ লোলচর্ম্ম জনৈক মনুষ্য স্তূপাভিমুখে অগ্রসর হইতেছে। স্তূপের