দ্বিতীয় যুদ্ধে তনুদত্তের পরাভব বার্ত্তা জ্ঞাত হইলেন। প্রতিষ্ঠানের ভীষণ দুর্গ তুমি বোধ হয় দেখিয়াছ, সেরূপ সুদৃঢ় দুর্গ তৎকালে মধ্যদেশে আর ছিল না বলিলেও অত্যুক্তি হয় না; গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে দুর্গটি অবস্থিত ছিল ও উহা অধিকার না করিয়া পূর্ব্বে বারাণসী বা পশ্চিমে অন্তর্ব্বেদী অধিকার করা অসম্ভব ছিল। গুপ্ত সাম্রাজ্য অতীত হইবার শত শত বর্ষ পরেও প্রতিষ্ঠান আর্য্যাবর্ত্তে রাজশক্তির একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল; বহু শতাব্দী পরে প্রতীহার ও রাষ্ট্রকূট সৈনিকগণ ছায়ায় বসিয়া প্রতিষ্ঠানের ভীষণ দুর্গের বর্ণনা করিত। ধীরে ধীরে স্থাণুদত্তের পুত্ত্র মিহিরকুলকে সম্মুখে রাখিয়া বেণীতীরে উপস্থিত হইলেন। তখন তনুদত্ত ও নাগদত্ত দুর্গরক্ষার চেষ্টায় ব্যাপৃত হইলেন; দেখিতে দেখিতে পবিত্র প্রতিষ্ঠানপুর অস্পৃশ্য হূণগণ কর্ত্তৃক অধিকৃত হইল। বৃদ্ধ সম্রাট দুর্গমধ্যে অবরুদ্ধ থাকিয়া সাম্রাজ্যের কার্য্যনির্ব্বাহ করিতেছিলেন, সৌরাষ্ট্রে পর্ণদত্ত তখনও গুপ্তাধিকার পুনঃপ্রবর্ত্তন করিবার চেষ্টায় ব্যাপৃত ছিলেন। প্রতিষ্ঠানদুর্গ অবরোধকালেও মিহিরকুলের বলবৃদ্ধি হইতেছিল; সুতরাং স্বীয় বলবৃদ্ধির জন্য স্কন্দগুপ্তকেও বিশেষ চেষ্টা করিতে হইয়াছিল। অবসর পাইলেই সম্রাট দুর্গ হইতে বহির্গত হইয়া নিকটবর্ত্তী নগরগুলি হইতে সৈন্যদল পুষ্ট করিবার চেষ্টা করিতেন; এইরূপে প্রতিষ্ঠান অবরোধে হূণরাজের বর্ষত্রয় অতিবাহিত হইল। উভয়পক্ষেই সৈন্য সংগ্রহ হওয়ায় কোন পক্ষেরই আশু জয়লাভের আশা রহিল না। তরুণবয়স্ক মিহিরকুল বিলম্বে বিচলিত হইলেন ও সে সংবাদ স্কন্দগুপ্তের কর্ণগোচর হইল। প্রাচীন গুপ্ত সাম্রাজ্যের তখন অন্তিম দশা, স্কন্দগুপ্তের বহু চেষ্টা সত্বেও প্রতিষ্ঠানের উদ্ধার হইল না, অর্দ্ধসৈন্য অবরুদ্ধ দুর্গের পরিখাপার্শ্বে
১১৭