পাষাণের কথা
[ ১১ ]
বৃদ্ধের শুশ্রূষায় সৈনিক ক্রমশঃ সুস্থ হইয়া উঠিলেন। উভয়ে ক্ষুদ্র পর্ণকুটীরমধ্যে বাস করিতেন ও পরস্পরের সাহায্যে দিনপাত করিতেন। বৃদ্ধের শুশ্রূষায় জীবন লাভ করিয়া যুবা তাঁহার প্রতি অত্যন্ত অনুরক্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন ও নির্জ্জন, শ্বাপদসঙ্কুল অরণ্যমধ্যে বৃদ্ধকে ত্যাগ করিয়া যাইতে পারিতেছিলেন না। তিনি যথাসাধ্য বৃদ্ধের সেবা করিতেন কুটীর মার্জ্জন, পুষ্প ও ফল আহরণ, ভগ্নস্তূপের চতুঃপার্শ্ব মার্জ্জন ইত্যদি সমুদায় কার্য্যভার তিনি স্বেচ্ছায় গ্রহণ করিয়াছিলেন। অবসরমত বৃদ্ধ আগন্তুককে প্রাচীন কাহিনী শ্রবণ করাইতেন, তথাগতের কথা, সদ্ধর্ম্মের কথা, প্রাচীন রাজগণের কথা প্রতিদিনই আবৃত্তি করিতেন। বুদ্ধ-কথা শুনিয়া যুবকের চক্ষুদ্বয় অশ্রুভারাক্রান্ত হইত। তরুণ শাক্যরাজকুমার কিরূপে নাগরিকের দুঃখদর্শনে ব্যাথিত হইয়া সংসারত্যাগ করিয়াছিলেন, কত ক্লেশ সহ্য করিয়া সম্বোধি লাভ করিয়াছিলেন, কিরূপে তাঁহার জীবন ধর্ম্ম প্রচারে ব্যয়িত হইয়াছিল এই সকল কথা শুনিতে শুনিতে হেমন্তের দীর্ঘ রাত্রি অতিবাহিত হইত। বৃদ্ধ স্তূপগাত্রের ও বেষ্টনীর স্তম্ভসমূহের লেখমালা পাঠ করিয়া স্তূপনির্ম্মাণের কথার কিয়দংশ অবগত হইয়াছিলেন। সময় সময় দুইজনে ধনভূতি ও তাঁহার নাগরিকগণের কথাও হইত। বৃদ্ধ প্রিয়দর্শী ও দেবপুত্র কণিষ্ক প্রভৃতি সদ্ধর্ম্মের পৃষ্ঠপোষক রাজগণের সম্বন্ধে যাহা জানিতেন আগন্তুককে তাহা শ্রবণ করাইতেন। অভিধর্ম্মের ব্যাখ্যা অপেক্ষা প্রাচীন ইতিহাসের কথা যুবক অধিক মনোযোগের সহিত শ্রবণ করিতেন। গুপ্তরাজবংশের আধিপত্যকালে আত্মবিচ্ছেদে ও সাহায্যাভাবে সদ্ধর্ম্মের কিরূপে অবনতি
১২৪