বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা



[ ১৩ ]


 যশোধর্ম্মদেবের বিশাল সাম্রাজ্য জলবুদ্‌বুদের ন্যায় অনন্তে বিলীন হইয়া গিয়াছে, উত্তরাপথে তাহার চিহ্নমাত্রও নাই; রেবাকণ্ঠ হইতে লৌহিত্য পর্য্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ডের অধীশ্বর স্বীয় অনুজকে স্বপদে সুপ্রতিষ্ঠিত করিতে পারেন নাই। যশোধর্ম্মের মৃত্যুর সহিত আর্য্যাবর্ত্তে দশপুরের রাজবংশের ক্ষমতা বিলুপ্ত হইয়াছিল। প্রাচীন গুপ্তবংশের ধ্বংসাবশেষ লইয়া নিত্যই নূতন রাজ্য গঠিত ও অচিরে বিলুপ্ত হইতেছিল। যশোধর্ম্মের মৃত্যুর সহিত ক্ষুদ্র সঙ্ঘারামের সৌভাগ্যসূর্য্যও অস্তমিত হইয়াছিল। যতদিন সম্রাট জীবিত ছিলেন ততদিন ত্রাণকর্ত্তা বৃদ্ধ স্থবিরকে স্মরণ করিয়া স্তূপ ও সঙ্ঘারামের জন্য অজস্র অর্থব্যয় করিতেন, ততদিন সঙ্ঘারামের অধিবাসীর অভাব হয় নাই। অর্থলোলুপ, সঙ্কীর্ণচেতা, পশুবৃত্তি অনুসরণকারী বোধিসত্ত্ব ও শক্তিগণের আবির্ভাবে ক্ষুদ্র সঙ্ঘারাম সর্ব্বদাই পরিপূর্ণ থাকিত। কিন্তু সম্রাটের মৃত্যুর পরে যখন আর্দ্র বালুকানির্ম্মিত কন্দুকের ন্যায় সাম্রাজ্যের প্রদেশগুলি বন্ধনহীন হইয়া বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িল তখন বোধিসত্ত্ব ও শক্তিমণ্ডলী সুখের দিন অতীত দেখিয়া স্তূপসান্নিধ্য পরিত্যাগ করিল। আটবিক প্রদেশ তখন জনাকীর্ণ হইয়া পড়িতেছিল। দূরে আভীরগণ একখানি গ্রাম স্থাপন করিয়াছিল; নির্ভয়হৃদয়ে অসিতবরণী আভীরবালিকাগণ ধনভূতির নগরশিরে মহিষচারণ করিত। সঙ্ঘারাম জনশূন্য হইলে গ্রাম হইতে আভীর রমণীগণ সন্ধ্যার প্রাক্কালে আসিয়া স্তূপ ও সঙ্ঘারাম মার্জ্জনা করিত, বনজাত পুষ্পমালায় আমাদিগকে সজ্জিত করিত এবং রজনীতে অসংখ্য ঘৃতপ্রদীপদানে আমাদিগের নিকট হইতে অন্ধকারকে দূরে রাখিবার চেষ্টা করিত, আভীর যুবকগণ আসিয়া আমা-

১৪৭